
ঢাকা : আর পাঁচটা দিনের মতো শনিবার রাতেও পালস নাইটক্লাবে ডিউটি ছিল তাঁর। ইমরান ইউসুফের কানে আচমকাই একটানা গুলির শব্দটা এসেছিল। মার্কিন নৌসেনার নাবিক ছিলেন।
সন্ত্রাস-বিধ্বস্ত আফগানিস্তানে বেশ কয়েক বছর কাটাতেও হয়েছিল চাকরি সূত্রে। সদ্য নাবিকের চাকরি থেকে অবসর নিয়ে পালসে বাউন্সার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন বছর চব্বিশের ইমরান। তাই প্রথম চার রাউন্ড গুলির শব্দ শোনার পরেই তাঁর বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে ‘হাই ক্যালিবার’ বন্দুক থেকে গুলি চলছে নাইটক্লাবে। মুহূর্তে হামলার বিষয়টি বুঝতে পেরে যান তিনি। ছুটে এসে ক্লাবের বহু সদস্যের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন সে রাতে। আর তাঁকেই এখন নায়ক হিসেবে বরণ করে নিয়েছে গোটা অরল্যান্ডো।
ইমরানের সাহসিকতার কাহিনি এখন লোকের মুখে মুখে ঘুরছে। তাতে অবশ্য বেশ বিব্রতই তিনি। তাঁর ফেসবুক পেজে খুব সম্প্রতি একটা স্ট্যাটাস আপডেট দিয়েছেন তিনি। লিখেছেন, ‘‘আমায় অনেকেই নায়কের আসন দিচ্ছেন দেখছি। কিন্তু আমি তখন যা করেছি, সেটা একটা ঘটনার প্রতিক্রিয়া মাত্র।’’
পুলিশ জানিয়েছে, সে রাতে কমপক্ষে ৭০ জনের প্রাণ বাঁচিয়ে তাঁদের নাইটক্লাব ছেড়ে পালাতে সাহায্য করেছিলেন ইমরান।
ঘাতক মতিনকে কি মাঝে মধ্যেই দেখা যেত ওই নির্দিষ্ট ক্লাবে? ইমরান এ নিয়ে বিশেষ কিছু জানাতে পারেননি। তবে ক্লাবের মালিকের তরফে তাঁর মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমকে স্পষ্ট জানিয়েছেন, মতিন ওই নাইটক্লাবের সদস্য ছিল না। এক-আধবার হয়তো সে ওই ক্লাবে যেতে পারে, কিন্তু নিয়মিত সে পালসে যেত না। আজ বিভিন্ন মার্কিন পত্রিকায় অবশ্য মতিনের বর্তমান স্ত্রী নুরকে উদ্ধৃত করে এ খবরই বেরিয়েছে যে পালসের সদস্য ছিল মতিন। নিয়মিত সেখানে যেতও তাঁর স্বামী।
নুর অবশ্য এ-ও দাবি করেছিলেন যে গত শনিবার রাতে মতিনকে গাড়ি করে তিনিই পালসের সামনে ছেড়ে এসেছিলেন। তা হলে সোজা এসে পুলিশকে জানাননি কেন?
নুর জাহি সমলনের এ হেন আচরণই ভাবাচ্ছে এফবিআইকে। তদন্তের মুখ এখন তাই নুরের দিকেই ঘোরাতে চাইছেন তাঁরা। নুরের পারিবারিক ইতিহাস জানারও চেষ্টা চলছে। গোয়েন্দা সংস্থার একটি সূত্র জানাচ্ছে, খুব শীঘ্রই মামলা করা হতে পারে তাঁর বিরুদ্ধে। নুর যে মতিনের হামলার কথা ভাল ভাবেই জানতেন, তা মোটামুটি প্রমাণিত। এই হামলার জন্য বন্দুক কেনার সময়ও মতিনের সঙ্গেই ছিলেন তিনি। সে ক্ষেত্রে সত্য গোপন, গণহত্যা-সহ একাধিক অভিযোগ আনা হবে বছর তিরিশের নুরের বিরুদ্ধে।