বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে যেকোনো ধরনের আলোকসজ্জা থেকে বিরত থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার (ইকোনমিক স্যাংশন) বাস্তবতায় বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টার, বিপণিবিতান, দোকানপাট, অফিস-আদালত এবং বাড়িঘরে আলোকসজ্জা না করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হলো।
মানুষের কষ্ট কিছুটা লাঘবে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের ক্ষেত্রে এলাকাভিত্তিক রুটিন করার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, `আমাদের এখন একটাই উপায়- কখন, কোন এলাকায় বিদ্যুতের লোডশেডিং হবে সেটার একটা রুটিন তৈরি করা। যাতে মানুষ প্রস্তুত থাকতে পারে। মানুষের কষ্টটা যেন আমরা লাঘব করতে পারি। সে বিষয়ে আমাদের এখন নজর দিতে হবে। আমি আশা করি দেশবাসী আমাদের সহযোগিতা করবেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্ব একটা ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ আমরা সবার ঘরে দিয়েছি ঠিকই, কিন্তু বর্তমানে আমাদের লোডশেডিং করতেই হবে; উৎপাদনও সীমিত রাখতে হবে। সবাইকে বিদ্যুৎ-গ্যাস ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়া আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সবাইকে আহ্বান করেছি প্রত্যেককে নিজ নিজ সঞ্চয় বাড়াতে হবে। খরচের ক্ষেত্রে মিতব্যয়ী হতে হবে। যতটুকু পারা যায় বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হতে হবে। বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে হবে।
তিনি বলেন, আমেরিকা রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, ইউরোপ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তার প্রভাবে তেলের দাম বেড়ে যাচ্ছে, সারের দাম বেড়ে যাচ্ছে, খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে, জাহাজ ভাড়া বেড়ে যাচ্ছে। সে প্রভাব সারাবিশ্বের উপর পড়েছে, বাংলাদেশের উপরও পড়েছে। সেগুলো মোকাবিলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষিতে আমাদের ভুর্তকি দিতে হচ্ছে, বিদ্যুতে ভুর্তকি দিতে হচ্ছে। তারপরও আমরা সাধারণ মানুষকে নগদ অর্থ দিচ্ছি। এখন আমরা উপকারভোগী কার্ড করে দিচ্ছি, রেশন কার্ডের মতো পারিবারিক কার্ড। যেখানে স্বল্প মূল্যে প্রায় এক কোটি মানুষের জন্য কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। যাতে তারা স্বল্পো মূল্যে খাদ্য পণ্য কিনতে পারে। সেই ব্যবস্থাটাও আমরা করে দিচ্ছি। মানুষের কল্যাণে যা যা করার সেই ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।
সরকারপ্রধান বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, বিদ্যুৎ উৎপাদন আমরা বাড়িয়েছি। সেই বিদ্যুৎ আমরা সমস্ত বাংলাদেশে প্র্রত্যেকটা ঘরে বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হয়েছি। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে এখন তেলের দাম বেড়ে যাচ্ছে, ডিজেলের দাম বেড়ে যাচ্ছে। প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এলএনজির দাম বেড়ে যাচ্ছে। সব কিছুর দাম এমনভাবে বেড়ে গেছে, আমাদের নিজস্ব যেটুকু গ্যাস আছে তা দিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালিয়ে রাখাটাই একটা কষ্টকর ব্যাপার হয়ে গেছে। অত্যন্ত ব্যয়বহুল।