ছবি- সংগৃহীত
রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে খুলনার কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় একমত হলেন সকল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবেলা করে যাতে ক্ষুদ্র কৃষক ও উৎপাদকদের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হয় সেজন্য সকলে একই সুরে জাতীয় পর্যায়ে দাবি তুলে ধরবেন বলে অঙ্গীকারবদ্ধ হন।
বুধবার খুলনার স্থানীয় একটি হোটেলে উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন) ও খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি) আয়োজিত ‘কৃষি ও খাদ্য অধিকার : প্রত্যাশিত জন-ইশতেহার’ শীর্ষক কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এ অঙ্গীকার করেন।
সাংবাদিক গৌরাঙ্গ নন্দীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), জাতীয় পার্টি ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃবৃন্দ ছাড়াও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও সাংবাদিকগণ অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, বর্তমানে শিল্প ও সেবাখাতে যে পরিমাণে ভর্তুকি ও অন্যান্য প্রণোদনার তুলনায় কৃষিতে সহায়তার পরিমাণ যৎসামান্য। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা জমির উপর অধিকার হারিয়ে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকে পরিণত হচ্ছে। কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় উৎপাদন নিরুৎসাহিত হচ্ছে, ফলে কৃষিতে প্রবৃদ্ধি ক্রমশ কমে যাচ্ছে।
কর্মশালায় সকল রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে উপকূলীয় বেড়িবাঁধের ব্যবস্থাপনা ইউনিয়ন পরিষদের হাতে হস্তান্তর করা, নারী কৃষকের স্বীকৃতি ও অধিকার নিশ্চিত করা, উপকূলীয় খালগুলো দখলমুক্ত ও উন্মুক্ত করা, কৃষিখাতে তরুণদের অন্তর্ভূক্তির জন্য প্রণোদনা দেয়া, জলবায়ু বাস্তুচ্যূতসহ ভূমিহীনদের খাসজমি বরাদ্দের হার বৃদ্ধি করা, কৃষিবীমা প্রবর্তন করা, কৃষিপ্রযুক্তির আধুনিকায়নে সরাসরি কৃষকদের ভর্তুকি দেয়া, কৃষিশ্রমিকদের শ্রম-অধিকার নিশ্চিত করা, জলবায়ুসহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবন ও উৎপাদনে অধিক হারে প্রণোদনা দান, সমবায়ভিত্তিক চাষাবাদব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা, খাস জলাশয় ও খাসজমিতে কৃষক ও জেলেদের অধিকার নিশ্চিত করা, কৃষিখাতে ভর্তুকি বৃদ্ধি, উপজেলা পর্যায়ে কৃষক-বাজার প্রতিষ্ঠা করা, কৃষিক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ের শিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ, আমিষের ঘাটতি মোকাবেলায় গবাদিপশু ও হাঁসমুরগি চাষে বিশেষ সহায়তা প্রদান, কৃষিখাতে মাঠভিত্তিক গবেষণা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি এবং গবেষণা ফলাফল দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করার প্রচেষ্টা থাকবে বলে রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ অঙ্গীকার করেন।
কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্যামল সিংহ রায়, জেলা শাখার সভাপতি আশরাফুজ্জামান বাবুল, সাধারণ সম্পাদক মানিকুজ্জামান অশোক, সদস্য অরিন্দম মল্লিক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ খুলনা জেলার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির ববি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র খুলনা মহানগর শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক তারিকুল ইসলাম, খুলনা মহানগর মহিলা দলের সভাপতি রেহানা আখতার, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি এইচএম শাহাদৎ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ হোসেন, খুলনা জেলার সাধারণ সম্পাদক স.ম. রেজাউল করিম, খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান মন্টু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির খুলনা জেলা সম্পাদকম-লীর সদস্য দেলোয়ার উদ্দীন দিলু, এসএম ফারুকুল ইসলাম, জাতীয় পার্টি খুলনা মহানগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গাওসুল আজম, জনউদ্যোগ-খুলনার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-খুদা, খুলনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুবীর রায়, দৈনিক সমকালের মামুন রেজা, ক্লিন-এর মাহবুব আলম প্রিন্স, সাজ্জাদ হোসেন তুহিন, হাসান মেহেদী প্রমূখ।-বিজ্ঞপ্তি