Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১২ ১৪৩১, শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪

‘গ্রেপ্তারি পরোয়ানার সঙ্গে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সম্পর্ক নেই’

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:৪৭, ১৯ জানুয়ারি ২০২০

প্রিন্ট:

‘গ্রেপ্তারি পরোয়ানার সঙ্গে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সম্পর্ক নেই’

ঢাকা: ফৌজদারি অপরাধের মামলায় প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি আরো বলেন, ‘এর সঙ্গে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কোনো সম্পর্ক নেই।’

রোববার সচিবালয়ে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান।

গত বছরের ১ নভেম্বর প্রথম আলোর কিশোর ম্যাগাজিন ‘কিশোর আলো’র বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান দেখতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা যান ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের শিক্ষার্থী নাইমুল আবরার (১৫)। ঘটনার পরদিন প্রথমে মোহাম্মদপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেন আবরারের বাবা মজিবুর রহমান। পরে ৬ নভেম্বর ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আমিনুল হকের আদালতে অবহেলাজনিত কারণ উল্লেখ করে আরেকটি মামলা করেন আবরারের বাবা।

ওই হত্যা মামলায় প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এটা নিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও বিশিষ্ট নাগরিকরা বিবৃতি দেন।

বিষয়টি কীভাবে দেখছেন- জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন, যে কেউ বিবৃতি দিতে পারে। আমাদের দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। যে কেউ তার মত প্রকাশ করতে পারে। আমি দেখেছি কাগজে, ৪৭ বিশিষ্টজন এ ব্যাপারে বিবৃতি দিয়েছেন। তবে বাংলাদেশে এ ৪৭ জন ছাড়াও আরো হাজার হাজার বিশিষ্টজন বা বুদ্ধিজীবী আছেন। তারা তাদের বিৃবতি দিতেই পারেন।’

 ‘তবে কোনো অবহেলাজনিত মৃত্যু হওয়ার পর সেটি যদি লুকানোর অপচেষ্টা করা হয় বা একই সঙ্গে পোস্টমর্টেম না করে দাফন করা হয়- এগুলো তো নিশ্চয়ই অপরাধ। প্রথমত, অবহেলাজনিত মৃত্যু, যদিও এটি এখনও ইনভেস্টিগেশন পর্যায়ে আছে, সেটি হওয়ার পর, সেটিকে লুকানোর চেষ্টা কিংবা এ ধরনের অপমৃত্যু হলে পোস্ট মর্টেম ছাড়া দাফনের জন্য যারা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল তাদের পক্ষ থেকে প্ররোচনা দেয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ আছে। অভিযোগ সত্য-মিথ্যা সেটি তদন্তে বেরিয়ে আসবে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনাগুলোর সঠিক বিচার যাতে হয়, যারাই দায়ী…। কারা দায়ী সেটা আদালত ঠিক করবে। যারা দায়ী তাদের যাতে সঠিক বিচার হয় সেজন্য আমি আশা করব যে, বিশিষ্টজনরা বিবৃতি দিয়েছেন সেজন্য তারা একটি বিবৃতি দেবেন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই, তারা বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধের জন্য বিবৃতি দিয়েছিল। যখন ফিলিস্তিনে মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সেটির বিরুদ্ধে বিবৃতি দেয় না। সুতরাং তাদের বিবৃতি খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যারা বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধের জন্য বিবৃতি দেয় আর ফিলিস্তিনে পাখি শিকারের মতো মানুষ শিকার করা হয় সেটির বিরুদ্ধে যখন বিবৃতি দেয় না, তাহলে সেই সংগঠনের গ্রহণযোগ্যতা আগে কোথায় ছিল তা বলতে চাই না, এখন কোথায় গেছে সেটি নিয়ে তো অনেকের মনে প্রশ্ন আছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এটির সঙ্গে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কোনো সম্পর্ক নেই। একটি ফৌজদারি অপরাধের কারণে মামলা হয়েছে। আদালত সেখানে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। আদালত তো স্বাধীন, কোথায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করবে বা করবে না, সেটি আদালতের এখতিয়ারের বিষয়। তবে এটির সঙ্গে কোনোভাবেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সম্পর্ক নেই। কারণ এটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত কোনো সংবাদের জন্য মামলা হয়নি, গণমাধ্যমে কোনো কিছু বলার জন্য তো মামলা হয়নি।’

 

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer