Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১২ ১৪৩১, শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪

খুলনায় অনিয়ন্ত্রিত ইজিবাইক: থেমে আছে নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ

শেখ হেদায়েতুল্লাহ, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:২৬, ৯ এপ্রিল ২০১৯

প্রিন্ট:

খুলনায় অনিয়ন্ত্রিত ইজিবাইক: থেমে আছে নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ

খুলনা: খুলনা মহানগরীর যানজট নিরসনে ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণের যে উদ্যোগ নেয়া হযেছিল তা থমকে আছে প্রায় ২ মাস। চলতি বছর ১৫ জানুয়ারি থেকে শুধুমাত্র খুলনা মহানগরীর অধিবাসী ইজিবাইক মালিকদের নগরীতে ইজিবাইক চালানোর অনুমতি পায়।

মহানগরীর বাইরের ইজিবাইক যাতে নগরীতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য নগরীর প্রবেশমুখে চেকপোস্ট বসানো হয়। ট্রাফিক পুলিশ ও কেসিসির জনবল দিয়ে এটি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। শুরুতে কয়েকদিন নিয়ন্ত্রণ হলেও পরে সেটি ‘উপরি পাওয়া’র মাধ্যমে নগরীতে নানা অজুহাতে প্রবেশ করার সুযোগ পায়।

ইজিবাইক চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে কেসিসির লাইসেন্স শাখা নির্ধারিত মূল্যে আবেদন ফরম বিক্রি করে। ৫ হাজার লাইসেন্স দেয়ার টার্গেট নিয়ে ১০ হাজার আবেদন পত্র বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু আবেদন ফরম বিক্রির শেষ দিনে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রেজিস্ট্রেশন নিতে আগ্রহী ইজিবাইক চালকদের মধ্যে মাত্র ৮হাজারের মত ফরম বিক্রি হয়। অথচ এক হিসেব মতে নগরীতে প্রায় ৪০ হাজার ইজিবাইক চলাচল করে থাকে। ইতোমধ্যে প্রায় ২ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও লাইসেন্স দেয়া শুরু হয়নি।

১২ বছরের বেশি সময় পর ব্যাটারি চালিত ইজিবাইকের লাইসেন্স দিচ্ছে খুলনা সিটি করপোরেশন। সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দিয়ে লাইসেন্সবিহীন ইজিবাইক বন্ধ করা সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই উদ্যোগে যানজটও কমে আসবে বলে আশা নগর কর্তৃপক্ষের। নানা আলোচনা সমালোচনা থাকলেও কম খরচে সাধারণ মানুষের বাহন হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ইজিবাইক। এই বাস্তবতায় দীর্ঘদিন পর নতুন করে যানটির লাইসেন্স দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে সিটি কর্পোরেশন। লাইসেন্স দেয়ার পর অনুমোদনহীন যান শহরে ঢুকতে দেয়া হবে না। সিটি মেয়রের আশা, ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে আনা গেলে যানজট অনেকটাই কমে আসবে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে নগরীর ইজিবাইক চলাচল ৫টি শ্রমিক সংগঠনের নিয়ন্ত্রণে। এগুলো হচ্ছে মহানগর ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন, অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি, রূপসা ইজিবাইক মালিক সমবায় সমিতি, একতা ইজিবাইক সমবায় সমিতি ও ইজিবাইক শ্রমিক লীগ। এসব সংগঠনের বিরুদ্ধে প্রতিদিন ইজিবাইক চালকের নিকট থেকে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

২০০৮ সালে নগরীতে চলাচলের জন্য ১ হাজার ৯৬৩টি ইজিবাইকের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন নবায়ন না করায় সেগুলোর বৈধতা হারিয়েছে। বর্তমান মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক নগরীতে ইজিবাইক চলাচলে সুশৃঙ্খলতা ফিরিয়ে আনার জন্য নানা উদ্যোগ নেন। যার অংশ হিসেবে কেসিসির এক সভায় গত জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ হতে নগরীতে বাইরের ইজিবাইক প্রবেশ বন্ধ করে দেন। ৫ হাজার ইজিবাইক চলাচলের অনুমোদন দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্তও নেয়া হয়। সেই হিসেবে নগরীর ভোটার এমন ইজিবাইক চালকদের নিকট থেকে আবেদন নেয়া হয়।

১০ হাজার আবেদন পত্র বিক্রির সিদ্ধান্ত নেযা হয়। আবেদন পত্র যাচাই বাছাই শেষে ৫ হাজার জনকে লাইসেন্স দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবেদন পত্র বিক্রি হয় ৮ হাজার ২২২টি। কিন্তু এসব আবেদন এখনও যাচাই বাছাই শুরু হয়নি। ফলে কবে নাগাদ নগরীতে বৈধ ইজিবাইক চলাচল করবে তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।

এর আগে কেসিসির সাবেক মেয়র ২০১৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি মেয়রের দায়িত্ব থাকাকালে ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। এ নিয়ে খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য ( বর্তমানে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী) বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, খুলনা-২ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ট্রাফিক বিভাগ, বিআরটিএ, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দায়িত্বশীল সংস্থা একাধিক বৈঠক করেন। তবে কোন সুফল বয়ে আসেনি। যার কারণে দিনের পর দিন নগরীতে অবৈধ যান ইজিবাইকের সংখ্যা বেড়েছে।

খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এ বিষয়ে বলেন, নগরীতে ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়া হযেছে। ইতোমধ্যে লাইসেন্স দিতে আবেদন ফরমও সংগ্রহ করা হয়েছে। আবেদন পত্র যাচাই- বাছাই করে তারপর লাইসেন্স দেয়া হবে। অতি দ্রুততম সমযের মধ্যে যাচাই- বাছাই সম্পন্ন করবেন বলে তিনি জানান।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer