গাজীপুর: গাজীপুরে সাংবাদিকের নামে দায়ের করা বন মামলায় হাইকোর্ট থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন সাংবাদিক মোজাহিদ। একটি সাজানো মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক বন মামলার ভুক্তভোগী এই সাংবাদিক তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, বনের গাছে একটি আচরো আমি দেইনি তার পরেও আমার নামে বনের মামলা হয়েছে।
দৈনিক যোগফলের সাবেক সাংবাদিক কি কারনে বনের মামলার আসামী হয়েছেন ফেসবুক ওয়ালে তার একটি বর্ণনা তিনি প্রকাশ করেছেন। তার বর্ণনায় জানা গেছে, গত বছরের ২১শে নভেম্বর, ২০২০ শনিবার দৈনিক যোগফল পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত সংবাদ পট্রি মেরে বন মামলার আসামী বদলে ফেলেন বিট কর্মকর্তা আয়ুব আলী- শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই সংবাদে বিট কর্মকর্তা আয়ুব আলী শেখ ও রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা ফরেস্টার হারুন অর রশিদ খানের বক্তব্য নেন সাংবাদিক মোজাহিদ। জানা যায় দৈনিক যোগফলে প্রকাশিত সেই সংবাদটির সম্পুর্ন তথ্য প্রমাণ যোগফল কর্তৃপক্ষের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
পোস্টে আরো জানা যায় গত ৫মার্চ শ্রীপুর উপজেলার রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জের রাজেন্দ্রপুর পূর্ব বিটের বসাঞ্চলের ৪৯ নম্বর কাপিলাতলী মৌজার গেজেটভুক্ত সাত নাম্বার সি এস দাগে ১০-১২জন ব্যাক্তির বন ভুমিতে বেআইনি ভাবে প্রবেশ করে আকাশমনি গাছ, শাল গাছের কপিস কর্তন করে ইটেরসড়ক নির্মাণের অপরাধে বিট কর্মকর্তা আইয়ুবআলী শেখ বাদি হয়ে একটি বন মামলার (মামলার নাম্বার ০৯/রাজ পূর্ব/২০১৯-২০২০) এজাহার দায়ের করেন।
ঘটনা স্থল থেকে ৫০০ পিস ইট, তিনটি আকাশমনি গাছের বল্লী, এক বোঝা গজারি ছাটি কপিস, একটি গাইতি, দা ও করাত জব্দ করে জব্দ তালিকা তৈরি করা হয়েছে। জব্দ করা মাল নোট বইয়ের ৫৮/২৬৪৯ এ লিখে সাক্ষিদের স্বাক্ষর নিয়ে অফিস হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ১২০ নাম্বার পত্র যোগে ১৫ মার্চ মামলার এজাহার সহ প্রয়োজনীয় নথি পাঠানো হয় রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে।
বিটের অপরাধ বিবরণী রেজিস্টাররের পাশাপাশা রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ের অপরাধ বিবরণী রেজিস্টারেও মামলাটির যাবতীয় তথ্য লেখা হয়। অথচ পরে ওই মামলাটির এজাহার বাতিল করে এবং আসামিদের নাম পরিবর্তন করে একই মামলা নাম্বারে ভিন্ন আর একটি বন মামলা দায়ের হয়েছে গাজীপুর বন আদালতে। মামলা নম্বর একই রয়েছ। কেবল আসামিদের নামের বদল হয়েছে। জোরাতালি দিয়ে অপরাধের ধরন বদলানো হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, দুর্নীতির সংবাদটি প্রচারের পর প্রাথমিক তদন্ত শেষে ওই বিট কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক বদলি করে বন বিভাগ। তিনি এখন সিলেটে কর্মরত আছেন। এবং বদলির সম্ভাবনা ও দুর্নীতির প্রমাণ হলে চাকুরির ক্ষতি হতে পারে এমন সন্দেহে তিনি মামলা দিয়েছেন বলে সাংবাদিক মোজাহিদ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন। মোজাহিদের আইনজীবি এডঃ মোয়াজ্জেম হোসাইন এক ভিডিও বার্তায় বলেন, সারা দেশে সাংবাদিকদের উপর জুলুম নির্যাতন চলছে, এটা তারই একটি অংশ। তিনি আরো বলেন, যে দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের পর ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি এই মিথ্যা মামলার এজাহার করেন।
বহুমাত্রিক.কম