এবার বিশ্বের অন্যতম মূল্যবান প্রযুক্তি সংস্থা মাইক্রোসফট বোর্ডের সদস্যপদ ছাড়লেন বিল গেটস। বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত জনহিতকর কাজে আরো বেশি মনোনিবেশ করার জন্যই শুক্রবার তিনি ওই দায়িত্ব ছেড়ে দেন বলে জানিয়েছে সিঙ্গাপুরের সংবাদ মাধ্যম দ্য স্ট্রেইটস টাইমস।
ধনকুবের বিল গেটস এবং তার স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস বিশ্বের সর্ববৃহৎ দাতব্য সংস্থা গেটস ফাউন্ডেশন পরিচালনা করছেন। এই ফাউন্ডেশনের কোটি কোটি ডলারের সম্পদ রয়েছে এবং বিশ্ব জুড়ে রোগ ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তারা প্রচুর অর্থ ব্যয় করে থাকেন।
২০০৮ সালের শুরুতে মাইক্রোসফটের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে শুরু করেন গেটস। যদিও ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি বোর্ড চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর গত ৪ বছর ধরে কেবল বোর্ড মেম্বার ছিলেন। কিন্তু শুক্রবার তিনি সেই দায়িত্ব থেকেও সরে গেলেন।
তার পদত্যাগ সম্পর্কে মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সত্য নাদেলা বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে বিলের সাথে কাজ করতে পারাটা এক বিরাট সম্মান সুযোগ। তার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি।’মাইক্রোসফট বোর্ড থেকে বিল গেটস পদত্যাগ করার পর এখন এটি ১২ সদস্যের সমন্বয়ে পরিচালিত হবে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।
এর আগে বোর্ড থেকে পদত্যাগের কথা জানিয়ে বিল গেটস বলেছেন, ‘মাইক্রোসফট সব সময় আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে থাকবে। দ্বিতীয় ধাপে আমি অংশীদারত্ব এবং বন্ধুত্বের মাধ্যমে সম্পর্ক ধরে রাখতে চাই।’
দীর্ঘদিন পৃথিবীর শীর্ষ ধনীর তালিকায় প্রথম থাকা বিল গেটস এই মুহূর্তে ফোর্বসের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ধনী আমাজনের জেফ বেজোস।
ব্যক্তিগত কম্পিউটারের জন্য সফটওয়্যার ডেভেলপ করে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করেন কলেজ থেকে ঝরে পড়া গেটস। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোর আলবুকার্কে গিয়ে ছেলেবেলার বন্ধু পল অ্যালেনের সঙ্গে মিলে মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠা করেন। তার সেই বন্ধু ও মাইক্রোসফটের অংশীদার মারা গেছেন ২০১৮ সালে।
১৯৮০ সালের দিকে পাল্টে যায় বিল গেটসের জীবনের গতিপথ। ওই সময় অপারেটিং সিস্টেম এমএস-ডিওএস তৈরি করতে আইবিএমের সঙ্গে চুক্তি হয় তাদের। মাইক্রোসফট উন্মুক্ত হয় ১৯৮৬ সালের দিকে। এক বছরের ভেতর ওই সময় ৩১ বছর বয়সী গেটস বিলিয়নিয়ার হয়ে যান।
গত কয়েক বছর আগে স্ত্রী মেলিন্ডা গেটসকে নিয়ে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন বিল গেটস। ওই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তারা পৃথিবীর দরিদ্র দেশগুলোর উন্নয়নে কাজ করছেন। বিশ্বের দারিদ্রতা, শিক্ষা আর চিকিৎসা খাতে হাজার-হাজার কোটি টাকা দান করছেন বিল গেটস দম্পতি।