ছবি : পিআইডি
ঢাকা : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, ২১ শতকের প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের দরবারে সাফল্যের সঙ্গে টিকে থাকতে উন্নয়ন-গবেষণামূলক কর্মকান্ডের প্রতি আরো মনোযোগ দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
মঙ্গলবার বিকেলে ওসমানী মেমোরিয়াল অডিটোরিয়ামে এশিয়াটিক সোসাইটির ১৭তম বার্ষিক সম্মেলনে ভাষণদাণকালে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এশিয়াটিক সোসাইটির গবেষণা ক্ষেত্রগুলো উন্নত করুন। তরুণ গবেষকরা অনুপ্রাণিত হবে। সর্বোপরি জাতীয় উন্নয়ন হবে।’
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, বিজ্ঞানী, গবেষক, বিশেষজ্ঞ, বুদ্ধিজীবীদেরকে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিসহ দেশে-বিদেশে তাদের গবেষণা ও লেখালেখির অন্যান্য অসামান্য অবদানগুলো তুলে ধরার আহ্বান জানান ।
রাষ্ট্রপতি হামিদ, বিভিন্ন গবেষণা কার্যক্রমে বিনিয়োগের জন্য সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির উন্নয়নে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এশিয়াটিক সোসাইটির পন্ডিতদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আপনারা মানসিকতার পরিবর্তন করে বলয় থেকে বেরিয়ে আসুন, আপনাদের সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে, কারণ, তারা দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি।’
তিনি বলেন, আপনাদের লেখায় সাধারণ মানুষের সুখ ও দুঃখের পাশাপাশি তাদের আশা-আকাক্সক্ষা প্রতিফলিত হতে হবে এবং অবশ্যই সর্বোপরি জাতীয় স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে।
বর্তমান সরকারের চলমান উন্নয়নের কর্মকান্ডের উল্লেখ করে তিনি সন্ত্রাসবাদ, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, কুসংস্কার এবং নিরক্ষরতা-মুক্ত আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর এবং প্রগতিশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে এগিয়ে আসার জন্য সকল বিশেষজ্ঞ, বিদ্বান ও নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি, এই প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে এই সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানান।
‘আমাদের নিজস্ব প্রযুক্তি থাকা দরকার, পাশাপাশি আমরা অন্যদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তিকেও আমন্ত্রণ জানাবো, কিন্তু আমাদের সেগুলোর ওপর নির্ভর করে থাকা উচিত নয়,’ -তিনি এই ব্যাপারে প্রয়োনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বর্তমান সরকার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বহুমাত্রিক ব্যবহারের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত’ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
এশিয়াটিক সোসাইটি তার অসামান্য শিক্ষা, গবেষণা কার্যক্রম এবং ১০০টিরও বেশি গবেষণামূলক প্রকাশনার জন্য দেশ-বিদেশে প্রশংসা অর্জন করেছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, গবেষণা কার্যক্রমের মাধ্যমে সোসাইটির সদস্যরা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
অনুষ্ঠানে সোসাইটির প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. আমিরুল ইসলাম চৌধুরী ও সেক্রেটারি ড. সাব্বির আহমেদ বক্তৃতা করেন।
দেশের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, ফেলো সদস্য, ১৭তম বার্ষিক কাউন্সিলের কাউন্সিলরগণ এবং রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, রাষ্ট্রপতি এশিয়াটিক সোসাইটির ডিজিটালাইজড লাইব্রেরি ও হেরিটেজ মিউজিয়াম উদ্বোধন করেন।