
ছবি- সংগৃহীত
ভারতের গুজরাটে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর এই প্রথম পাকিস্তান আঘাত হেনেছে বলে দাবি করেছেন লাহোরের গভর্নমেন্ট কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও রাজনৈতিক বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী জাঘম আব্বাস।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আউটলুক বিজনেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টানা দ্বিতীয় রাতেও ভারতের অভ্যন্তরে ড্রোন হামলার চেষ্টা চালিয়েছে পাকিস্তান। প্রতিরক্ষা সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার রাতের হামলায় জম্মু ও কাশ্মীর থেকে শুরু করে গুজরাট পর্যন্ত অন্তত ২৬টি স্থানে হামলার লক্ষ্য ছিল। লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে বিমানবন্দর ও বিমানঘাঁটির মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও ছিল।
এ নিয়ে শনিবার ভোরে নিজের ফেসবুক পোস্টে পাকিস্তানি তরুণ আব্বাস লেখেন, ‘জায়নবাদী কল্পনার অনুপ্রেরণায় ভারত যে ‘নতুন বাস্তবতা’ চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল, তা পাকিস্তান প্রত্যাখ্যান করেছে।’
তিনি বলেন, ভারত একাধিকবার আন্তর্জাতিক সীমানা লঙ্ঘন করে পাকিস্তানের বেসামরিক এলাকায় ড্রোন ও ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছিল। আজ সকালে পাকিস্তান এর প্রতিক্রিয়ায় অপারেশন বুনয়া নুম মারসূস চালায়।
আব্বাস দাবি করেন, এই অভিযানে পাকিস্তানি বিমান ভারতের গভীরে ঢুকে সামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে, যার মধ্যে রয়েছে উধমপুর, দিল্লি এবং গুজরাট।
তিনি লিখেছেন, ‘এই প্রথম গুজরাটে আঘাত হানা হলো ১৯৭১ সালের পর। গুজরাটই হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসের ঘাঁটি, যেখানে নরেন্দ্র মোদির শাসনে ২০০০ মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছিল’।
পোস্টে আরও দাবি করা হয়, ভারতীয় বাহিনী সামরিক ঘাঁটি ও বিমানঘাঁটিগুলোতে যেমন উধমপুর ও বেয়াসে ক্ষতি স্বীকার করেছে। এই পরিস্থিতি পুরোপুরি যুদ্ধে রূপ নেবে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়, তবে ‘প্রতিরোধের ভারসাম্য’ এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলেই মত তার।
পোস্টের শেষে তিনি লেখেন, ‘ধুলা-মাটি সরে গেলে পাকিস্তানি জনগণের অনেক কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে তাদের ‘আয়রনক্ল্যাড বন্ধু’ চীনকে।’
এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের ভেতরে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা।
শনিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে পাকিস্তান বলেছে, ভারতের ‘অব্যাহত উসকানির’ জবাবে এই পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে। তাদের অভিযোগ, ভারত পাকিস্তানের তিনটি বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যার জবাবে এই অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ‘ফাতেহ’ নামের মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ভারতের গুজরাট, পাঞ্জাব ও রাজস্থান রাজ্য এবং ভারতশাসিত কাশ্মীরের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি ও অস্ত্র গুদামে হামলা চালিয়েছে। এ ধরনের হামলার সংখ্যা ২৫টিরও বেশি বলে জানানো হয়।
ভারতের সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের হামলাকে ‘খোলাখুলি উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা’ বলে উল্লেখ করেছে। তারা দাবি করেছে, পাকিস্তানের ড্রোন হামলা ও অন্যান্য গোলাবারুদ ব্যবহার সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে।
এদিকে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এক্স-এ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে মোবাইল লঞ্চার থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের দৃশ্য দেখা গেছে।