ফাইল ছবি
বিভিন্ন গুজবের পর সোমবার সকালে মুম্বাইয়ের জুহুতে নিজ বাসায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেছেন বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা ধর্মেন্দ্র। বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর, আর মাত্র কয়েকদিন পরই ৯০ বছরে পা দিতেন তিনি। এখনো পরিবার আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না দিলেও দ্য হিন্দু, এনডিটিভি, ফিল্মফেয়ারসহ ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো খবরটি নিশ্চিত করেছে।
পবন হংসে চলছে তাঁর শেষকৃত্য, যেখানে অমিতাভ বচ্চন, অক্ষয় কুমার, সালমান খান, আমির খান, অনিল কাপুর, সঞ্জয় দত্তসহ অসংখ্য তারকা উপস্থিত হয়ে শেষশ্রদ্ধা জানিয়েছেন। হেমা মালিনী, এষা দেওল ও পুরো দেওল পরিবারও সেখানে রয়েছেন। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে করণ জোহর, কারিনা কাপুর, অনন্যা পান্ডে—সামাজিক মাধ্যমে শোক জানাচ্ছেন সবাই।
গত কয়েকদিন ধরেই ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর গুজব ছড়াচ্ছিল। আজ তক, ইন্ডিয়া টুডে, ইকোনমিক টাইমস পর্যন্ত ভুলবশত সেই খবর প্রকাশ করে ফেলে। রাজনাথ সিং, জাভেদ আখতার, কে কে মেনন, চিরঞ্জীবী—অনেকেই টুইট করে শোক জানান। পরে এষা দেওল জানান, খবরটি গুজব, বাবার অবস্থা স্থিতিশীল। হেমা মালিনীও ক্ষোভ প্রকাশ করে ভুয়া খবর ছড়ানোকে ‘অসম্মানজনক’ বলেন। কিন্তু সেই গুজবের কয়েকদিন পরেই আসে সত্যি খবর—রাতে শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়, শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকেরা তাঁকে আর বাঁচাতে পারেননি।
১৯৩৫ সালে পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় জন্ম নেওয়া ধর্মেন্দ্রর প্রকৃত নাম ধর্মসিং দেওল। দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান হয়েও ছোটবেলা থেকেই সিনেমার প্রতি ছিল প্রবল ঝোঁক। ১৯৬০ সালে ফিল্মফেয়ার ট্যালেন্ট প্রতিযোগিতা জিতে মুম্বাইয়ে আসেন তিনি। ‘ফুল অউর পাথর’ তাঁকে রাতারাতি সুপারস্টার বানায়। পরের দুই দশকে তিনি হয়ে ওঠেন বলিউডের সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়ক—‘শোলে’, ‘চুপকে চুপকে’, ‘ধর্মবীর’, ‘দোস্ত’, ‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’—প্রতিটি ছবিতে নিজেকে নতুনভাবে উন্মোচন করেছেন। সহ–অভিনেত্রী হেমা মালিনীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে ছিল বলিউডের বড় আলোচিত ঘটনা, একসঙ্গে করেছেন ৩০টির বেশি ছবি।
প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কৌরের সংসারের সানি ও ববি দেওল আজও বলিউডের পরিচিত মুখ। বহু প্রজন্মের দর্শকের ভালোবাসায় গড়া যে তারকার ক্যারিয়ার ছয় দশকেরও বেশি বিস্তৃত ছিল, সেই ধর্মেন্দ্র আজ চিরবিদায় নিলেন ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে ‘হি-ম্যান’ নাম রেখে।




