Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১৩ ১৪৩১, শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪

বাংলাদেশে অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগের অফুরন্ত সুযোগ

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:২৫, ২৮ অক্টোবর ২০১৬

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

বাংলাদেশে অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগের অফুরন্ত সুযোগ

ঢাকা : বহির্বিশ্ব এবং অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল পথে অগ্রসর হচ্ছে বলে মনে করছে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশ (আইসিসিবি)।

আইসিসিবির ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে এ ধরনের মন্তব্য করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ইতিবাচক ম্যাক্রো অর্থনীতি, হ্রাসমান মূদ্রাস্ফীতি, রিজার্ভের ক্রমাগত বৃদ্ধি, নিয়ন্ত্রিত রাজস্ব ঘাটতি, স্থিতিশীল সরকারী ঋণ, যা অর্থনীতির উজ্জ্বল সম্ভাবনাকে বোঝায়।বাংলাদেশ হচ্ছে ১২টি উন্নয়নশীল দেশের একটি যে সমস্ত দেশসমূহ ২০১৬ সালে ৬ শতাংশের বেশী প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।বিশেষজ্ঞদের মতানুসারে যে কোন মাপকাঠিতেই বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালো করছে এবং এ অর্থবছরে ৭ শতাংশের বেশী প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

চলতি অর্থবছরে সরকার ১০টি ফাষ্ট ট্র্যাক মেগা প্রকল্পকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং এর ৮ প্রকল্পের জন্য ১৮৭ দশমিক ২৭ বিলিয়ন টাকা ফান্ড অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।মেগা প্রকল্পগুলো হচ্ছে পদ্মা সেতু, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, মেট্রো রেল, সোনাদিয়া গভীর সমূদ্র বন্দর, রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট, পায়রা সমূদ্র বন্দর, রামপাল থারমাল পাওয়ার প্ল্যান্ট, মাতারবাড়ী পাওয়ার প্ল্যান্ট, এলএনজি টারমিনাল এবং দোহাজারী-কক্সবাজার-গুনডুমরেল লাইন।

চলতি অর্থবছরের প্রথম তিনমাসে ফাষ্ট ট্র্যাক প্রকল্পের অনেকগুলোই বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করেছে।এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক চট্রগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল লাইন তৈরীর জন্য ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ফান্ডের ঘোষনা দিয়েছে,যা এশিয়া মহাদেশে রেলওয়েতে এডিবির সর্বোচ্চ বিনিয়োগ হবে।নতুন রেলরোডে এডিবির এ বিনিয়োগ ট্রান্স-এশিয়া রেলওয়ে নেটওয়ার্কের অংশ,এটা মিয়ানমার এবং এর বাইরেও বাংলাদেশের প্রবেশকে উন্নততর করবে।

আইসিসিবির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পদ্মা রেল সংযোগের জন্য চায়না রেল গ্রুপ লিমিটেড ৩৪৯ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন টাকার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।ডিপি রেইল (বৃটিশ কোম্পানী) ঢাকা-পায়রা সমূদ্রবন্দর রেল সংযোগ প্রকল্পে ৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে।ঢাকা এবং পায়রার মধ্যে রেল সংযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেহেতু সরকার ২০২২ সালের মধ্যে পায়রা সমূদ্র বন্দরকে মূল সমূদ্রবন্দর হিসাবে তৈরী করার পরিকল্পনা নিয়েছে।পায়রা বন্দর বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত এবং আন্তর্জাতিক সমূদ্র বন্দরে পরিণত হওয়ার সব সম্ভাবনাই রয়েছে, কিন্তু এ মূহুর্তে এর সড়ক এবং রেল সংযোগ ঢাকা ও দেশের অন্যান্য স্থানের সাথে একেবারেই স্গংীন।

বিগত সাত বছরে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে বিদ্যুৎ খাতে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে এবং ১৩ বিলিয়ন ডলার পাইপলাইনে আছে। বিদ্যুৎ খাতে এ বিনিয়োগের ফলে জনসংখার প্রায় ৮০ শতাংশের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁচেছে।কিন্তু এখনও বিদ্যুৎ খাতে অপরিসীম বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে,যেহেতুু ২০২১ সালের মধ্যে ২৪,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।

বাংলাদেশের ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম-আয়ের দেশের স্ট্যাটাস পাওয়া এবং সমন্বিত প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত ও দারিদ্র হ্রাস এবং আয়ের অসমতা দূরীকরণে বার্ষিক বিনিয়োগ ২০২০ সালের মধ্যে জিডিপির ৩৪ দশমিক ৪ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। সরকারী খাতের বিনিয়োগের জন্য ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাহ্যিক সম্পদের প্রয়োজন হবে। বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানের কারনে এর আরো বেশী সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে বলে আইসিসিবি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।

বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার পূর্ব অংশের কেন্দ্রবিন্দু এবং দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার সংযোগকারী।

বাংলাদেশ ডব্লিউটিওর ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে রপ্তানী বাড়বে এবং বহুমুখী হবে বলে আশা করছে আইসিসিবি। এ অঞ্চলের প্রধান তিনটি দেশ চায়না,জাপান এবং ইন্ডিয়া এনার্জিসহ অবকাঠামো খাতে ব্যাপক বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।সময়মত বিভিন্ন প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ খুব দ্রুতই আরো সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সক্ষম হবে।

আইসিসিবি বলছে,গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের মূল চ্যালেঞ্জসমূহ ছিল বেসরকারি বিনিয়োগ গতিশীল করা এবং সরকারী খাতের সম্পদসমূহের অধিকতর ভালো ব্যবহার।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer