নওগাঁ : জেলার পোরশা উপজেলার নিতপুর সীমান্তের বালাশহিদ দরগা ও দুয়ারপাল এলাকা দিয়ে প্রতি রাতে অবৈধভাবে ভারতীয় গরু বাংলাদেশে আসছে। সীমান্ত এলাকায় স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ চোরাকারবারি দল গোপনে ভারতে অনুপ্রবেশ করে গরুগুলো নিয়ে আসছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, করিডোর ছাড়াই গোপনে গরুগুলো নিয়ে আসায় প্রতিমাসে প্রায় ১৫ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। চোরাকারবারীদের এ অনুপ্রবেশ কোন ভাবেই নিতপুর বিজিবি ১৪ সদস্যরা রোধ করতে পারছে না।
জানা গেছে, একটি বিশেষ মহল চোরাইপথে ভারত থেকে প্রতি রাতে সীমান্ত দিয়ে বিপুল পরিমাণ গরু-মহিষ পাচার করে বাংলাদেশে নিয়ে আসছে। সরকার এ সকল গবাদিপশু থেকে রাজস্ব না পেলেও স্থানীয় কয়েকজন লাইনম্যান আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নাম ভাঙ্গিয়ে টাকা আদায় করছেন।
চোরাচালানীদের নিকট থেকে প্রতি জোড়ার জন্য দেড় থেকে দুই হাজার টাকা করে নেয়া হয় বলে জানা যায়। এসকল নামধারী লাইনম্যানের সহায়তায় নিতপুরের বালাশহিদ দরগা ও দুয়ারপাল দিয়ে চোরাপথে নিয়ে আসা গবাদিপশু বিনা বাধায় রাতারাতি বিভিন্ন পরিবহনযোগে দেশের অভ্যন্তরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ভারতের বটতলী, পাকুয়া হাট, টুঙ্গিপাড়া এলাকার মহাজনরা কমিশনের ভিত্তিতে প্রতি রাতে বাংলাদেশী গরু ব্যবসায়ীদের গরু-মহিষ সরবরাহ দিয়ে থাকে বলেও জানাগেছে। ভারত থেকে এক জোড়া গরু বা মহিষ পাচার করে সীমান্ত অতিক্রম করে এ দেশে আনতে পারলে মহাজনের কমিশন ও দাম বাদ দিয়ে দ্বিগুণ লাভ হয়। অধিক লাভের আশায় এলাকার উঠতি বয়সের যুবক ও চোরাচালানকারীরা নিযুক্ত লাইনম্যানের সহায়তায় রাত হলেই দল বেধে ছুটছে সোহাতী গ্রামের বালাশহিদ দরগা এলাকা ও দুয়াপাল গ্রামের শেষ প্রান্তে।
সীমান্তের নির্জন এ স্থান দুটিতে সারা রাত থাকে চোরাচালানীদের দখলে। রাত গভীর হলেই দলে দলে তারা ওই এলাকা দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। রাতারাতি ধনী হওয়ার নেশায় এই কাজ করতে গিয়ে ইতোমধ্যে ওই সীমান্তে বেশ কয়েকজন যুবক ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর হাতে ধরা পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। অনেকে ভারতের জেলের ঘানি টানছে। আবার বেশ কয়েকজন বিএসএফের নির্যাতনে মারাও গেছেন।
বর্তমান শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় চোরাকারবারীরদল হেঁটেই অনায়াসেই ভারতে প্রবেশ করতে পারছেন। প্রতি রাতে গরু/মহিষ ভারত থেকে নিয়ে এসে তারা বিভিন্ন গ্রামের মধ্যে লুকিয়ে রেখে পরে সুযোগ বুঝে সে গুলো দীঘির হাট, উমইল হাট, সাপাহার হাট, মশিদপুর হাট, মধইল হাট সহ বিভিন্ন হাটে বেঁচা কেনা হয়। তবে গবাদিপশু পাচারের ব্যাপারে নিতপুর সীমান্তে বিজিবি’র কর্মরত কিছু অসাধু সদস্যরাও জড়িত এবং টাকার ভাগ পেয়ে থাকেন বলেও জানা যায়।
সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে গরু আসার কথা স্বীকার করে বিজিবি নিতপুর সীমান্ত ফাঁড়ীর ইনচার্জ সুবেদার সালেহ আহম্মেদ জানান, এ ব্যাপারে কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে। তবে সীমান্তে তাদের কোন লাইনম্যান নেই এবং কোন সদস্য এর সাথে জড়িত নয় বলেও দাবি করেন তিনি।
বহুমাত্রিক.কম