ঢাকা: ভারতের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ, গবেষক অধ্যাপক গৌতম ভদ্র বলেছেন, বাস্তব বা কল্পিত চরিত্র যাই হোক না কেন, গোপাল ভাড় চরিত্রকে বাঙালি সংস্কৃতির কেউ উপেক্ষা করতে পারে না।
রোববার বিকেলে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে বাঙালির গোপাল ভাঁড় : একটি লোক-চরিত্রের নির্মাণের সন্ধানে শীর্ষক একক বক্তৃতানুষ্ঠানের তিনি এসব কথা বলেন।
একক বক্তা অধ্যাপক গৌতম ভদ্র বলেন, গোপাল ভাঁড় অনুসন্ধান আমার জনসংস্কৃতি অধ্যয়নেরই অবিচ্ছিন্ন অংশ। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে গোপাল ভাঁড় বিষয়ে গবেষণা করছি। এই গবেষণার প্রথম পর্বটি বাংলা একাডেমিতে উপস্থাপন করতে পেরে আমি আনন্দিত।
তিনি বলেন, গোপাল ভাঁড় বাস্তব চরিত্র নাকি কল্পিত সৃষ্টি এ নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে তর্ক-বিতর্ক যাই থাকুক গোপাল ভাঁড় চরিত্রকে বাঙালির সংস্কৃতির ইতিহাসে কেউ উপেক্ষা করতে পারেনা। কারণ এই চরিত্রের নামে প্রচলিত গালগল্পের মধ্য দিয়ে বাঙালি সমাজের হাস্যকৌতুক-অসঙ্গতি-কল্পনাশক্তির রসময় প্রকাশ ঘটেছে। রাজসভার সঙ্গে ভাঁড়ের সম্পর্ক সুবিদিত। কৃষ্ণচন্দ্রের রাজসভায় গোপাল ভাঁড়ের উপস্থিতি শরীরি অবয়বের হোক কিংবা কল্পিত হোক সে যেন হয়ে ওঠে জাগ্রত বিবেক; বিদ্যমান অন্যায়-অবিচারকে রঙ্গব্যঙ্গ ও যুক্তির বাণে কোণঠাসা করে সমাজ সংস্কারের চেষ্টা করেন।
অধ্যাপক ভদ্র বলেন, গোপাল ভাঁড়ের সূত্রে রঙ্গরসিকতার সামাজিক পরিসরটিও আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। যুগে যুগে সৃষ্ট বীরবল, মোল্লা নাসিরুদ্দীন, তেনালিরামের মতো ভাঁড় জাতীয় চরিত্রকে সমকালীন ঐতিহাসিক বাতাবরণে বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। যার মধ্যে দিয়ে আমাদের জাতীয় সাংস্কৃতিক পরম্পরার নানান প্রেক্ষিত উন্মোচিত হবে। এই প্রসঙ্গে ঢাকাই রঙ্গরসিকতাও বিশেষভাবে আলোচনার দাবি রাখে।
সভাপতির বক্তব্যে শামসুজ্জামান খান বলেন, বাংলা একাডেমির অনুরোধে প্রখ্যাত ঐতিহাসিক গৌতম ভদ্র গোপাল ভাঁড় বিষয়ে বক্তৃতা প্রদানের মাধ্যমে ফোকলোরের একটি বিশেষ দিককে নতুন করে আমাদের তর্ক-তদন্তের সম্মুখীন করলেন। গোপাল ভাঁড় বিষয়ে তাঁর গবেষণা ফোকলোর গবেষণার ক্ষেত্রেও যোগ করবে নতুন মাত্রিকতা।
সোমবার বিকেল ৫টায় একই মিলনায়তনে বাঙালির গোপাল ভাঁড় : একটি লোক-চরিত্রের নির্মাণের সন্ধানে শীর্ষক ধারাবাহিক একক বক্তৃতানুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বের আয়োজন রয়েছে।
বহুমাত্রিক.কম