Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১২ ১৪৩১, শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪

ইন্টার্ণ চিকিৎসক দিয়ে চলছে যশোর জেনারেল হাসপাতাল

কাজী রকিবুল ইসলাম, যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০১:৫৭, ২১ মার্চ ২০১৮

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

ইন্টার্ণ চিকিৎসক দিয়ে চলছে যশোর জেনারেল হাসপাতাল

যশোর : যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চলছে ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের দিয়ে। ১২ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ৪২ চিকিৎসক, ১০জন বদলী চিকিৎসক এবং ২০জন মেডিকেল কলেজের শিক্ষক থাকলেও ভর্তি রোগীরা একবারের বেশি তাদের দেখা পান না।

সব সবসময় ইন্টার্ণ চিকিৎসকরা ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে চলেছেন। ফলে ২৫০ শষ্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে নানা ধরণের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে। অবশ্য কর্তপক্ষ বিষয়টি স্বীকার করে বলছেন, অচিরেই আরও ৪২জন ডাক্তার যোগদান করবেন। তখন এ ধরণের সমস্যা থাকবে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের কার্ডিওলোজি বিভাগে ১জন, শিশু বিভাগে ১জন, গাইনি বিভাগে ২জন, সার্জারী বিভাগে ১জন, মেডিসিন বিভাগে ১জন, চক্ষু বিভাগে ১জন, অর্থো বিভাগে ২জন, করোনারি বিভাগে ১জন, প্যাথোলজি বিভাগে ১সহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন মোট ১২জন। এছাড়া সহকারি রেজিষ্টার, মেডিকেল অফিসার এবং জরুরী বিভাগের চিকিৎসকসহ মোট চিকিৎসক আছেন ৪২জন। এছাড়া বদলী চিকিৎসক আছেন ১০জন। এছাড়া মেডিকেল কলেজের শিক্ষক আছেন প্রায় ২০জন।

গত কয়েকদিন হাসপাতালের বিভিন্ন রোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন সকালে হাসপাতালের চিকিৎসকরা ভর্তি রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন। বিকালে বা রাতে তাদের সেবা পাচ্ছেন না। আর ছুটি দিন হলে তো কথায় নেই।

বাঘারপাড়া উপজেলার হলদা গ্রামের মৃৃত ইনছার আলীর ছেলে আকবার বিশ্বাস (৫৭) ১২ মার্চ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে শ্বাস কষ্টের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন। যার রেজিস্টেশন নম্বার (১০৮৫৬/৩৫)। কয়েক দিন মেডিসিন বিভাগের পুরুষ পেইং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৬মার্চ শুক্রবার বিকাল সাড়ে পাঁঁচটার দিকে মেডিসিন বিভাগের ইন্টার্ণ চিকিৎসক লিমা তাকে সিসিইউ করোনারী রেফার্ড করেন।

ওইদিন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে জরুরী বিভাগের মাধ্যমে সিসিইউ করোনারী বিভাগে ভর্তি হন। যার রেজিষ্ট্রেশন নম্বর (১৩৪৬/১৭)। সেখানে ইন্টার্ণ চিকিৎসক সাইমা মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র মোতাবেক চিকিৎসা দিতে থাকেন। অথচ এদিন বিকালে চিকিৎসকের দেখা মেলেনি তার।

গত ১৩ মার্চ সিসিইউতে ভর্তি হন যশোর শহরের কাজীপাড়া এলাকার টুকু শেখ (৬০)। যার রেজিষ্ট্রেশন নম্বর (১১১৩৪/১৪৩)। শার্শার বাজার এলাকার বক্সগাজীর ছেলে জিহাদ আলী ভর্তি হন একই দিন। তারা দুইজনে অভিযোগ করে বলেন শুক্রবার তারা কোন ডাক্তারকে তিনি দেখতে পাননি।
একই অবস্থা অর্থো সার্জারী বিভাগে।

গত ১৩ মার্চ থেকে মডেল অর্থো সার্জাারি ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন যশোর সদর উপজেলার দেয়াপাড়া গ্রামের কাজী আব্দুল আলীমের ছেলে ইনামুল। একই দিন ভর্তি হয়েছেন সদর উপজেলার ঝাওদিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে মোসলেম উদ্দিন। তারা দুইজনে বলেছেন, সকালে ডাক্তার আসলেও পরে সারা দিন তাদের পাওয়া যায় নি।

যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাট গ্রামের আব্দুল ওহাবের স্ত্রী সবুরা খাতুন এবং একই উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের আমির আলীর স্ত্রী লালবানু গত ১৫ মার্চ মহিলাপেইং বেডের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। সকালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের দেখা গেছে। পরে আর তাদের দেখা যায়নি।

ছাড়পত্র নিয়ে যাওয়া মহিলা মেডিসিন বিভাগের রোগী মনিরামপুরের আকলিমা বেগম জানান, গত চারদিনে সকালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা পেয়েছেন। অন্য কোন সময় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আসেন তা তার জানা নেই।

এ বিভাগে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ডে গেছেন জোহরা বেগম। তার স্বজন ফরহাদ বলেছেন, যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকের মান দিন দিন কমছে। গরীব, অসহায় ছাড়া আর এখানে কেউ আসবে না।

এ ব্যাপারে কথা হয় আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) অহেদুজ্জামান ডিটু। তিনি বলেন হাসপাতালে সকালে এক বার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যাবেন সেটা আদেও কাম্য নয়। বিষয়গুলি গুরুত্বের সাথে দেখা হবে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রহিম মোড়ল বলেন, চিকিৎসক সংকটের কারণে এরকম ঘটনা ঘটতে পারে। আর ৪২ জন চিকিৎসকের অনুমোদন পাওয়া গেছে। আন্ত:মন্ত্রণালয়ের কারণে তারা যোগদান করতে পারছেন না। তারা যোগদান করলে এ সমস্যার সমাধান হবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer