
যশোরের ভরত ভাযনার দেউল/ছবি: বহুমাত্রিক.কম
খুলনা: খুলনা বিভাগীয় প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরে জনবল সংকট চলছে। ফলে নতুন অনুসন্ধান কাজে তেমন কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না এ অঞ্চলের মূল্যবান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোর। এতে হারিয়ে যাচ্ছে অনেক প্রাচীন ঐতিহ্য।
খুলনা বিভাগে প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন রয়েছে ৭১টি। সঠিকভাবে রণাবেণ হয় না কোনটিই। সংরক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহাসিক এসব নিদর্শনগুলো। পুরাকীর্তি দর্শনে অধিকাংশ স্থানেই দর্শনার্থীদের জন্য নেই তেমন কোনো সুব্যবস্থা।
নিরাপত্তার অভাবে অধিকাংশ জায়গা হয়ে উঠছে মাদক ও বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপের নিরাপদ স্থান। সম্পদ বা জমি অবৈধভাবে দখলে নিচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
দীর্ঘদিন ধরে খননের পর সম্প্রতি বাগেরহাটের খানজাহান আলী (র.) এর বসতভিটা আবিষ্কৃত হয়। তবে বাজেট স্বল্পতায় ১৯ মার্চ থেকে খনন কাজ বন্ধ রয়েছে। ২০১১-১২ সালে খুলনার রূপসা উপজেলার পিঠাভোগের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক বাড়ি এবং ফুলতলার পঁয়গ্রাম কশবা এলাকায় খানজাহান আলী (র.) এর সময়কার দশ গম্বুজ মসজিদের কিছু নিদর্শন পাওয়া যায়।
নিরাপত্তার অভাবে ভরত ভায়না বৌদ্ধ মন্দিরের (ভরত রাজার দেউল) মূল্যবান সম্পদ চুরি হয়ে যাচ্ছে। কেশবপুর উপজেলার ভরত ভায়না গ্রামের ত্রিমোহনী নামক স্থানে এ প্রত্ননিদর্শনটির অবস্থান।
খ্রিস্টীয় বিশ শতকের গোড়ার দিকে ঢিবিটির উচ্চতা ছিল ১২২২ মিটার এবং ২৬৬ মিটার পরিধি। রক্ষণা্বেক্ষণের অভাবে নিদর্শনটি বিলীন হতে চলেছে। প্রায় প্রতিদিনই শত শত দর্শনার্থী ভিড় জমায় এখানে। তবে সন্ধ্যার পর আশপাশজুড়ে বসে মাদকের আসর।
১ একর ৭৬ শতক জমির ওপর অবস্থিত এ প্রত্নস্থলটির কিছু অংশ দখল করে নিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। অবৈধভাবে গড়ে তুলেছে বসতবাড়ি। আবার কিছু অংশজুড়ে চলছে সবজি চাষ। দেয়ালজুড়ে কোথাও নেই সীমানা প্রাচীর। দেখাশোনার জন্য একজন কর্মচারী রাখা হলেও তার উপস্থিতি মেলে না।
১৯২৮ সাল থেকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের আওতায় রয়েছে ঢিবিটি। ১৯২৩, ১৯৮৫ এবং ১৯৯৫ থেকে ২০০০ সালে ঢিবিটিতে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ পরিচালিত হয়। এরপর ১৫ বছর ধরে আর কোনো সংস্কারমূলক কাজ হয়নি এখানে। বাজেট স্বল্পতায় সংস্কারমূলক কাজ না হওয়ায় কিছু অংশ মাটিতে ঢেকে রাখা হয়েছে।
অধিদফতরের খুলনা আঞ্চলিক পরিচালক মো. আমিরুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ ও অনুসন্ধান কাজ পরিচালনা করতে হয়। বাজেট স্বল্পতা ও জনবল সংকটের কারণে বিভিন্ন স্থানে খনন কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় রয়েছে। তবে এ বছর খনন কাজে ২৬ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে। যা বিগত দিনের তুলনায় কিছুটা বেশি। এভাবে বরাদ্দ পেলে কাজের অগ্রগতি বাড়ানো সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, এ বছরের শুরুতে ভরত ভায়না বৌদ্ধ মন্দিরসহ ১৬টি পুরাকীর্তির উন্নয়নের জন্য অধিদফতরে প্রস্তাব দেয়া হয়।
বহুমাত্রিক.কম