মুসলিমদের সর্ববৃহৎ জমায়েত হজের আর মাত্র ৫০ দিনের মতো বাকি থাকলেও এ বছর তা হবে কি না এ বিষয়ে এখনও সৌদি আরব কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি বলে জানিয়েছেন ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘হজ নিয়ে সৌদি সরকার এখনও কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। হজ হবে কি না কোনো নিশ্চয়তা নেই। আমরা সৌদি সরকারের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। কোনো খবর আসলে আমরাই আগে জানতে পারব।’
সোমবার গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয় যে এবার প্রতিটি দেশ থেকে কোটার ২০ শতাংশ লোক নিয়ে হজ হবে। এ বিষয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এ নিউজের কোনো সত্য নেই। মনগড়া নিউজ হলে তো হবে না। সৌদি সরকার কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।’
হজের মাত্র সময় আছে ৫০ দিন। হজ হতে হলে একটি যৌক্তিক সময় দিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেখুন, এবারে হজ হবে কি হবে না এটি সৌদি সরকারে সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে। যদি হজ হয় তাহলে নিশ্চয়ই একটি যৌক্তিক সময় দিয়েই তারা ঘোষণা দেবে।’তিনি জানান, আয়োজক দেশ হিসেবে সৌদি আরব হজ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে পরামর্শ করে বাংলাদেশ পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
‘আমরা যেকোনো সিদ্ধান্তের জন্য প্রস্তুত’ উল্লেখ করে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘হজযাত্রীদের নিবন্ধকরণ প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ সংক্ষিপ্ত নোটিশে হাজিদের পাঠাতে প্রস্তুত রয়েছে।’
এবার করোনা পরিস্থিতি এবং সৌদি সরকারের সিদ্ধান্ত এখনও না পাওয়ার কারণে নিবন্ধিত হজযাত্রীর সংখ্যা অনেক কম হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী জানান, মহামারিজনিত কারণে সৌদি আরব যদি এ বছর হজ জামাত আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত নেয় তবে নিবন্ধিত প্রার্থীরা পরের বছর অগ্রাধিকার পাবেন।
আবদুল্লাহ বলেন, ‘যারা ইতোমধ্যে হজের জন্য অর্থ জমা দিয়েছেন তাদের চিন্তার দরকার নেই। আপনি পরের বছর অগ্রাধিকার পাবেন। আগামীবার না যেতে চাইলে তার টাকা ফেরত পাবেন। এ বিষয়ে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি।’
হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম ইউএনবিকে বলেন, ‘রয়টার্স তাদের ধারণা থেকে নিউজ করেছে। সৌদি থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।’‘সৌদি সরকার যখনই সিদ্ধান্ত নেবে তখনই হজে লোক পাঠানো যাবে। সৌদি চাইলে এবার কম লোক দিয়ে এবং হজের সময় কম দিয়ে ঘোষণা দিতে পারে। অতএব সৌদি যেভাবে চাইবে সেভাবেই হজ হবে। সবকিছু সৌদির সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে,’ যোগ করেন তিনি।
হাব সভাপতি বলেন, ‘হজের নিবন্ধ শেষ করে আমরা প্রস্তুত আছি। সৌদি যখনই সিদ্ধান্ত জানাবে তখনই হজ যাত্রীদের পাঠাতে আমরা প্রস্তুত।’
কত দিন সময় রেখে ঘোষণা দিলে হজে লোক পাঠানো যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সৌদি সরকার যদি মনে করে এবার হজ করা সম্ভব, সেই যৌক্তিক সময় নির্ধারণ করেই তারা নির্দেশনা দেবেন।’
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে বাংলাদেশের হজের কোটা ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় আছেন ১৭ হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ২০ হাজার।
তবে, করোনার কারণে এ বছর নিবন্ধিত ৬৪ হাজার ৫৯৪ জনের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৪৫৭ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬১ হাজার ৫৯৪ জন নিবন্ধন করেছেন।
ফেব্রুয়ারিতে মন্ত্রিসভা হজ প্যাকেজ-২০২০ এর খসড়া অনুমোদন করে। যেখানে সরকার কর্তৃক পরিচালিত প্যাকেজ-৩ এর আওতায় একজন হজযাত্রীর ন্যূনতম ব্যয় ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।
গত মার্চে সৌদি আরব বাংলাদেশকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত হজ সম্পর্কিত কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য একটি নির্দেশনা জারি করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশ এপ্রিল পর্যন্ত নিবন্ধকরণ প্রক্রিয়া চালিয়ে যায়।
এ বছর চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৩০ জুলাই (৯ জিলহজ) হজ অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ইউএনবি
