Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ২৪ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪

শাজাহানপুরে ব্যাহত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা

আবদুল ওহাব, বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:২৪, ২১ জানুয়ারি ২০১৯

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

শাজাহানপুরে ব্যাহত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা

ছবি : বহুমাত্রিক.কম

বগুড়া : সরকারী নিয়মনীতি উপেক্ষা করে চলছে বগুড়া শাজাহনপুরের কড়িআন্জুল সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়। স্কুলটির শিক্ষকগন মানেননা কোন বিধি, মানেন না কোন আইন।

সরকারী নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার বিধান থাকলেও তা মানা হয় না এই বিদ্যালয়ে। শিক্ষকরা ১১-১২ টার দিকে বিদ্যালয়ে আসে এবং বিকেল ৩ টা না হতেই ছাত্রছাত্রীদের ছুটি দিয়ে বিদ্যালয় বন্ধ করে চলে যান। আর প্রতিনিয়ত বিদ্যালয়টির এই বেহাল দশার কারনে সেখানে ব্যাহত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয়টিতে আছেন ৩ জন শিক্ষক। এরমধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ মুরাদ হোসেন বিভিন্ন কারনে শিক্ষা অফিসে দৌড়াদৌড়িতে ব্যস্ত থাকেন। সহকারী শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদাউস ডেলিভারি হওয়ার জন্য ৬ মাসের ছুটিতে। এরপর আরেক সহকারী শিক্ষক সাবিনুর রহমান বিদ্যালয়টির একক কর্মকর্তা হওয়ায় ইচ্ছেমত সময়ে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে চলে যান। আর এজন্য তাকে কারও কাছে জবাবদিহিও করতে হয় না।

সোমবার ২১ শে জানুয়ারী বেলা ২টার দিকে দেখাযায় বিদ্যালয়টি বন্ধ। সকল দরজায় তালা লাগানো। এমতাবস্থায় প্রধান শিক্ষক মুরাদ হোসেনের নিকট বিদ্যালয়টি বন্ধ রাখার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমিতো উপজেলায় একটি কাজে এসেছি। স্কুল বন্ধের কারন জানিনা। সহকারী শিক্ষক সাবিনুরের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, সহকারী শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদাউস ৬ মাসের ডেলিভারি ছুটিতে, প্রধান শিক্ষক বেশীরভাগ সময় বিভিন্ন কাজে শিক্ষা অফিসে ব্যাস্ত থাকেন। তাই একা একা ভাল লাগেনা, স্কুল বন্ধ করে চলে এসেছি।

দেখা গেছে, স্কুল থেকে শহরের দুরত্ব ৪০ কিলোমিটারেরও বেশী। যাতায়াতে নেই কোন পাকা রাস্তা। তাছাড়াও গ্রামীন এই জনপদের রাস্তাও ভঙ্গুর। বিদ্যালয়ে আসতে কোথাও পায়ে হেটে কোথাও রিকশা ভ্যনে চড়ে যাতায়াত করতে হয়।

ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকগন জানান, বিদ্যালয়টির শিক্ষকগন সকলেই শহরে বাস করেন। সেখান থেকে তারা বিদ্যালয়ে ঠিক সময়ে আসতে পারেন না। প্রতিদিন তারা ১১ টা -১২ টার দিকে বিদ্যালয়ে পৌছে। আবার বেলা ৩ টা না হতেই দুরের রাস্তা বলে বিদ্যালয় বন্ধ করে চলে যায়। গড়ে দৈনিক ৩ ঘন্টার মত স্কুল চলে। বিদ্যালয়টি থেকে শিক্ষকরা প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা বেতন উত্তোলন করলেও পাঠদানে অবহেলা সীমাহীন। তথাপি বিষয়টির প্রতি গুরুত্ত দেয়না কোন কর্মকর্তা। এবিষয়ে বিদ্যালয়টির দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা এটিও জহুরুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এদিকে বিদ্যালয়টির সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেনের নিকট বিদ্যালয়টিতে শিক্ষা ব্যাহত হওয়ার কারণ ও এই বেহাল অবস্থার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুরের শিক্ষক তাই আগেই স্কুল বন্ধ করে চলে যায়। তাছাড়া কি করবো আমার কথা তো শিক্ষকরা শোনেনা। অপরদিকে স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়টিতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হলেও কোন ব্যাবস্থা নেয়া হয়না। তাই বিদ্যালয়টির শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

 

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer