Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

আষাঢ় ২২ ১৪৩২, সোমবার ০৭ জুলাই ২০২৫

জাপানের দ্বীপপুঞ্জে প্রায় ১৬০০ বার কম্পন : দ্বীপ ছাড়ছেন স্থানীয়রা

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:৪১, ৭ জুলাই ২০২৫

প্রিন্ট:

জাপানের দ্বীপপুঞ্জে প্রায় ১৬০০ বার কম্পন : দ্বীপ ছাড়ছেন স্থানীয়রা

ফাইল ছবি

জাপানের দক্ষিণে প্রত্যন্ত দ্বীপগুলোতে কয়েক সপ্তাহে প্রায় ১৬০০ বার ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দারা দ্বীপ ত্যাগ করতে শুরু করেছেন। সোমবার এ তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় মেয়র গেনিচিরো কুবো। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ।

ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত আকুসেকি দ্বীপে এখনো কোনো বড় ধরনের শারীরিক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া না গেলেও, রবিবার গভীর রাতে ৫.১ মাত্রার একটি কম্পন বেশ আতঙ্ক ছড়ায়। তবে মূল সমস্যা হলো ২১শে জুন থেকে অব্যাহতভাবে প্রায়দিনই কম্পন হওয়ায় স্থানীয়রা চরম মানসিক চাপে ভুগছেন এবং ঘুমাতে পারছেন না।

৮৯ জন বাসিন্দার মধ্যে ইতিমধ্যেই ৪৪ জন আকুসেকি দ্বীপ ছেড়ে কাগোশিমা শহরে আশ্রয় নিয়েছেন। মেয়র কুবো সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন আরেকটি কাছাকাছি দ্বীপ থেকেও ১৫ জন মানুষ এলাকা ছেড়েছেন। এই পৌরসভায় সাতটি বসবাসযোগ্য ও পাঁচটি নির্জন দ্বীপ রয়েছে। যা কাগোশিমা শহর থেকে ফেরিতে প্রায় ১১ ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত। জাপান মেটেরিওলজিক্যাল এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, ২১শে জুন থেকে শুরু হওয়া এই ধারাবাহিক কম্পনে সোমবার সকাল পর্যন্ত মোট ১৫৮২ বার ভূকম্পন রেকর্ড করা হয়েছে। 

ভূমিকম্পবিদরা ধারণা করছেন, এই বিরল ভূকম্পন প্রবণতার পেছনে পানির নিচে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ও ম্যাগমার প্রবাহ দায়ী হতে পারে। তবে কবে এই কম্পন থামবে, তা তারা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। মেয়র কুবো বলেন, আমরা ভবিষ্যতে কী ঘটতে যাচ্ছে তা জানি না। এটা কবে শেষ হবে, তাও আমাদের অজানা।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে এই এলাকাতেই একই ধরনের কম্পন পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল। তখন ৩৪৬টি ভূকম্পন রেকর্ড করা হয়। উল্লেখ্য, জাপান বিশ্বে সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ দেশগুলোর একটি, যা চারটি প্রধান টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত এবং প্রশান্ত মহাসাগরের ‘রিং অব ফায়ার’-এর অংশ। বছরে গড়ে প্রায় ১৫০০ বার কম্পন অনুভূত হয় সেখানে। বিশ্বব্যাপী ভূমিকম্পের প্রায় ১৮ শতাংশই জাপানে ঘটে। 

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর কারণে কিছু বিদেশি পর্যটক জাপান ভ্রমণ স্থগিত করেছেন। বিশেষ উদ্বেগ দেখা দেয় ২০২১ সালে পুনঃপ্রকাশিত একটি মাঙ্গা কমিক নিয়ে, যেখানে ৫ জুলাই ২০২৫ সালে একটি ভয়াবহ দুর্যোগের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল- যা শেষ পর্যন্ত ঘটেনি। তবে সাম্প্রতিক ভূকম্পন প্রবণতার কারণে দ্বীপবাসীর উদ্বেগ ও দুর্ভোগ এখন বাস্তব। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজন হলে আরও বড় পরিসরে উদ্ধার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।