
ফাইল ছবি
টেক্সাসে আকস্মিক ও বিধ্বংসী বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২। টেক্সাসের কেন্দ্রীয় অংশের বিভিন্ন অংশে ঘরবাড়ি নদীতে ভেসে গেছে। শতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। সবচেয়ে ভয়াবহ আঘাত হেনেছে ‘ক্যাম্প মিস্টিক’ নামের একটি অল-গার্লস সামার ক্যাম্পে। সেখানে ছোট ছোট কিশোরীদের ছুটি কাটানোর কথা ছিল। কিন্তু তা রূপ নেয় এক মৃত্যুপুরীতে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়, শুক্রবার ভোরে মাত্র ৪৫ মিনিটে নদীর পানি ২৬ ফুট বেড়ে যায়। তা ভাসিয়ে নেয় ঘর, ক্যাবিন, গাড়ি, শিশুশিবির। সামনে যা পড়েছে তার সবই তীব্র স্রোত টেনে নিয়েছে। ‘কার কাউন্টি’র শেরিফ ল্যারি লেইথা জানিয়েছেন, শুধু তার কাউন্টিতেই ৬৮ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৮ জনই শিশু। শেরিফ বলেন, আমরা যতক্ষণ না প্রত্যেককে খুঁজে পাই, ততক্ষণ থামছি না। বন্যায় ক্যাম্প মিস্টিক থেকে এখনও ১০ জন মেয়ে ও এক কাউন্সেলর নিখোঁজ রয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে প্রথমবারের মতো ক্যাম্পে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়। ভেজা মেঝে, গাদা গাদা ভাঙা খাট, ভেসে যাওয়া ব্যক্তিগত জিনিসপত্র দেখে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এক পরিবার বিদায় নেয় একটি নীল ট্রাঙ্ক নিয়ে। এক বাবা জানান তার মেয়েকে ক্যাম্পের সবচেয়ে উঁচু জায়গার ক্যাবিন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আশেপাশের গাছ ও পাথরের নিচে নিখোঁজদের খোঁজ করছিলেন। আরেক নারী ও কিশোরী রাবারের ওয়েডার পরে এক ক্যাবিনে ঢুকে ক্ষতবিক্ষত দৃশ্য দেখে কেঁদে ফেলেন। টেক্সাস গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট জানিয়েছেন, মঙ্গলবার পর্যন্ত আরও ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা আবারও বন্যা সৃষ্টি করতে পারে। তিনি বলেন, পাহাড়ি এলাকা পুরোপুরি ভিজে গেছে। আরও এক চিলতে বৃষ্টি বড় বিপর্যয় আনতে পারে। ক্যাম্প মিস্টিক ছাড়াও ট্র্যাভিস, কেন্ডাল, টম গ্রিন, উইলিয়ামসন কাউন্টিগুলোতেও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
টেক্সাস ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক সেফটির কর্নেল ফ্রিম্যান মার্টিন জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বন্যার প্রথম ৩৬ ঘণ্টায় ৮৫০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। হেলিকপ্টার, ড্রোন, নৌকা ব্যবহার করে নিখোঁজদের সন্ধান চলছে। উদ্ধারকারীরা সাপ, ভাঙা গাছ, এবং দ্রুতগামী স্রোতের মুখে পড়েও অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প রোববার কার কাউন্টিকে ফেডারেল দুর্যোগ এলাকা ঘোষণা করেছেন। ফলে ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি সক্রিয় হয়েছে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি আজই যেতাম, কিন্তু এখন গেলে শুধু বাধা হবো। এটা এক ভয়ানক ট্র্যাজেডি। সম্পূর্ণ হৃদয়বিদারক। পোপ লিও চতুর্দশও ভ্যাটিকান থেকে বিশেষ প্রার্থনা পাঠ করেন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য এবং বলেন, গুয়াদালুপে নদীর বন্যায় যারা প্রাণ হারিয়েছে, বিশেষ করে সামার ক্যাম্পে থাকা শিশুদের পরিবারের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জানাই।