
ফাইল ছবি
ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার দেহে প্রোস্টেট ক্যানসারের একটি ‘আক্রমণাত্মক রূপ’ ধরা পড়েছে, যা তার হাড়েও ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সময় রবিবার তার দপ্তর এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। তারা বলেছে, পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার প্রোস্টেট ক্যানসার ধরা পড়েছে। যা তার শরীরের হাড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
বিবৃতিতে জো বাইডেনের দপ্তর ক্যানসার শনাক্ত হওয়ার ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়ে বলেছে, গত সপ্তাহে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রস্রাবের সমস্যা বাড়ে। তখন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার প্রোস্টেটে একটি নতুন গুটি ধরা পড়ে। পরে শুক্রবার চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেন, তিনি প্রোস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত। ক্যানসাটি বেশ আক্রমণাত্মক, যার গ্লিসন স্কোর ৯ (গ্রেড গ্রুপ ৫) এবং এটি হাড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে।
তবে আশার কথা হলো, ক্যানসারটি হরমোন-সংবেদনশীল হওয়ায় এর চিকিৎসা সম্ভব। প্রেসিডেন্ট এবং তার পরিবার চিকিৎসকদের সঙ্গে বসে বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করছেন।বাইডেনের কার্যালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা এই বিবৃতির বাইরে আর কোনো মন্তব্য করবেন না।
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক জানায়, পুরুষদের মধ্যে ত্বকের ক্যানসারের পরে প্রোস্টেট ক্যানসার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) বলছে, প্রতি ১০০ জন পুরুষের মধ্যে ১৩ জনের জীবনের কোনো না কোনো সময় প্রোস্টেট ক্যানসার হয়।
এক্ষেত্রে সিডিসি বলছে, এই ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে বার্ধক্যই সবচেয়ে বড় ঝুঁকির কারণ।
সাবেক প্রেসিডেন্টের ক্যানসার ধরা পড়ার খবরে দুই দলের সমর্থকেরাই তার পাশে দাঁড়িয়েছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেন হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর থেকে বেশিরভাগ সময় আড়ালেই ছিলেন।
গত এপ্রিল মাসে তিনি শিকাগোতে অনুষ্ঠিত এক কনফারেন্সে ভাষণ দেন। পরে মে মাসে বাইডেন বিবিসিকে একটি সাক্ষাৎকার দেন। হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর এটি ছিল তার প্রথম সাক্ষাৎকার। সেখানে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে না অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত তার জন্য খুবই কঠিন ছিল।
গত কয়েক মাসে বাইডেনের স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। চলতি মে মাসেই ‘দ্য ভিউ’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি তিনি স্পষ্ট করে বলেন, হোয়াইট হাউসে শেষ দিকে তার স্মৃতিশক্তি বা মানসিক ক্ষমতা কমে যাওয়ার কোনো সত্যতা নেই। তিনি বলেন, এ ধরনের কোনো প্রমাণ নেই।
অনেক বছর ধরেই প্রেসিডেন্ট বাইডেন ক্যানসার গবেষণার জন্য কাজ করে আসছেন। ২০২২ সালে তিনি ও তার স্ত্রী ‘ক্যানসার মুনশট’ নামক উদ্যোগটি পুনরায় চালু করেন। এর লক্ষ্য ২০৪৭ সালের মধ্যে চার মিলিয়নের বেশি মানুষকে ক্যানসার থেকে বাঁচাতে গবেষণা ত্বরান্বিত করা।
২০১৫ সালে বাইডেন তার বড় ছেলেকে হারান। তার বড় ছেলে ব্রেইন ক্যানসারে মারা গিয়েছিলেন।