শ্রমিক বলতে তাদেরকেই বোঝানো হয় যারা শ্রমের বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করে। দৈনন্দিন জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শ্রমিক। কিন্তু যাদের পরিশ্রমের মাধ্যমে আমাদের দৈনন্দিন জীবন সহজ থেকে সহজতর হয়ে ওঠে তারাই প্রকৃত শ্রমিক, প্রকৃত যোদ্ধা।
আমরা দৈনন্দিন জীবনে যেখানে যায় শ্রমিক দেখতে পায় কিন্তু তাদেরকে প্রকৃত সম্মান দেয়না। যেমন: রিক্সাচালক, পরিবহন চালক, রাজমিস্ত্রি বা বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি। সবার থেকে বেশি ত্যাগ ও পরিশ্রমের বিনিময়ে যারা আমাদের মুখে খাবার তুলে দেয়, কৃষক। অনলাইনে খাবার অর্ডার করলে যে ডেলিভারি দিয়ে যায় তিনিও কিন্তু একজন শ্রমিক। প্রতিনিয়ত চোখে পরা মানুষ গুলোকে আমরা শুধু শ্রমিক হিসেবে বিবেচনা করি, মানুষ হিসেবে নয়। যার জন্য তারা তাদের প্রাপ্য সম্মান পান না।
বাংলাদেশের প্রধান জীবিকা কৃষি হওয়া সত্ত্বেও কৃষক কি তার ন্যায্য মূল্য পায়? না,পায়না। কৃষিপ্রধান দেশ হওয়া সত্ত্বেও এদেশের কৃষকরা আজ সব থেকে বেশি অসহায়। কৃষির উপর নির্ভরশীল প্রায় ৬৫% কৃষক বিগত ১ যুগ ধরে ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় অনেকেই কৃষি বিমুখ হয়ে দাড়িয়েছে যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বাধাগ্রস্ত করবে।
কৃষিকাজে সম্পৃক্তদের (৬৫%) তুলনায় দিনমজুর, রিক্সাচালক, হোটেল রেস্তোরাঁ কর্মী জানায় চলতি মাসে তাদের আয় নেমে এসেছে শূণ্যের কোঠায়। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর ও নজর কেরেছে। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ১৫ জেলার সাথে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি জানান, সরকারি সেফটিনেটের বাইরে থাকা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে। যারা সামাজিক নিরাপত্তার বাইরে আছে, যারা হাত পাততে পারবে না তাদের তালিকা করে খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে।
আবার লকডাউনের কারনে ডিজেল সংকটে জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।বাজারে মাছের খাবারের মূল্য ও বেরে গেছে। ফলে বাজারে দেখা দিয়েছে মাছের সংকট। কৃষকদের উৎপাদিত কাচা সবজি বিক্রি করতে পারছে না। মানুষের পুষ্টির অন্যতম উপাদান দুধ, ডিম, মুরগি উৎপাদনকারী খামারিরা পরেছেন বিপাকে। মিল কারখানা বন্ধের কারণে দুধ বিক্রি কমে গেছে। অঘোষিত লকডাউন যত দীর্ঘায়িত হচ্ছে তাদের কপালে চিন্তার ভাজ পরছে।তাই শুধু অনুরোধ নয়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের শ্রমিকদের কি করলে সহায়তা হবে সে ব্যাপারে সব ধরনের পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নিতে এবং প্রস্তুতি এখন থেকেই নিতে হবে।
লেখক : শিক্ষার্থী, আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউট; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
বহুমাত্রিক.কম