ছবি- সংগৃহীত
ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে প্রায় সারা দেশে বৃষ্টি হচ্ছে। ভোর থেকে ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিসহ থমথমে আবহাওয়া বিরাজ করছে। লাগাতার টিপটিপ বৃষ্টিতে রাজধানীর জনজীবনে কিছুটা দুর্ভোগ নেমে এসেছে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার হওয়ায় অফিসগামী মানুষ বাইরে বের হননি খুব একটা। কিন্তু কোচিং করা শিক্ষার্থী, চাকরির পরীক্ষার্থী এবং দৈনিক মজুরিতে কাজ করা মানুষ সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন। ভোরের দিকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি থাকলেও সময়ের সাথে সাথে এর পরিমাণ বেড়েছে।
এতে যারা ছাতা নিয়ে বের হননি, তারা ভোগান্তিতে বেশি পড়েছেন। অনেককেই বৃষ্টিতে ভিজে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।এদিকে বৃষ্টির কারণে সড়কে যানবাহনের সংখ্যা খুবই কম। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকার অধিকাংশ সড়কই ফাঁকা দেখা গেছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন ব্যবসায়ীরাও। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা দোকান খুলতে পারেননি। আবার যারা খুলেছেন তাদের বেচাকেনা কমে গেছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে পিরোজপুর, বাগেরহাট, ভোলা, খুলনা, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালীসহ উপকূলীয় জেলার নদ-নদীতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে নিম্নাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ।
এসব জেলার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি উপজেলাগুলোতে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। প্রস্তুত রাখা হয়েছে মেডিকেল টিম। দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ, টিন, চাল এবং কম্বল রয়েছে।
অন্যদিকে দুর্যোগপূর্ব ও পরবর্তী মানুষের সেবা দিতে সিপিপি সদস্য ও স্কাউট সদস্য কাজ করবেন। উপকূল এলাকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা চলছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। শুক্রবার সকালের দিকে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'এটি রাতে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন সে সম্ভাবনা কমে গেছে। এটি আজ ভোর বা সকালের দিকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।'
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি মধ্যরাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৫৫ কিমি. পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২০ কি.মি. পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২০ কিমি. দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১৫ কিমি. দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।