Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ২১ ১৪৩১, রোববার ০৫ মে ২০২৪

এখনও স্থল মাইন পুঁতছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১:৪০, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

এখনও স্থল মাইন পুঁতছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা : আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী এখনও বাংলাদেশ সীমান্তে স্থল মাইন পুতে রাখছে যা সেখান থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবনের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে।

এসব মাইন যে গত কয়েক সপ্তাহে পাতা হয়েছে, একাধিক সূত্র থেকে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে দাবি করছে সংস্থাটি। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে মিয়ানমারের কাছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।এতে প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে সংস্থাটি বলছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির সীমান্তের মূল পয়েন্টগুলোতে ল্যান্ডমাইন পুঁতেছে। এমনকি উত্তর রাখাইনের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে হামলার আগে সেখানকার রাস্তায়ও ল্যান্ডমাইন পুঁতে রাখা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, সৈন্যরা যে মাইন পাতছে - সেটাও তারা দেখেছেন। বিশেষ করে বুথিডং, টং পিও লেট ইয়ার সীমান্ত, এমনকি তারা নো ম্যানস ল্যান্ডেও মাইন পুঁতে রাখতে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন।বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবির বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ল্যান্ডমাইনের আঘাতে এ পর্যন্ত পাঁচজন নিহত এবং ১২জন আহত হয়েছে। বলা হচ্ছে, মূলত বাংলাদেশের তম্রু সীমান্ত দিয়েই ল্যান্ডমাইনে আহত রোহিঙ্গারা বেশি ঢুকছে।

বিজিবির কক্সবাজারের অধিনায়ক লে: কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান বলেন, শুরুতে কয়েকদিন প্রায় রোজই হাঁটুর নিচ থেকে বা পা উড়ে গেছে এমন মানুষ পেয়েছেন তারা। এই আহতদের দেখে বোঝা গেছে যে, স্থল মাইন বিস্ফোরণে তারা আহত হয়েছেন।"এপার থেকে তো আমরা দেখতে পাই না, কিন্তু আহতদের মুখে শুনে বুঝতে পারছি, কাঁটাতারের বেড়ার ২০০ গজ বা ৩০০ গজ এলাকার মধ্যে মিয়ানমারের ভেতরে তারা মাইন বিস্ফোরণে আহত হচ্ছে। এছাড়া তম্রু সীমান্ত, চাকমাকাটা এলাকা এবং নারায়নচর এলাকাগুলো থেকে আমরা এমন অনেক আহত পেয়েছি।"

লে: কর্নেল খান বলেন, গত কয়েকদিনে এই সংখ্যা কমেছে। তবে এর আগে এধরনের খবরে মিয়ানমারের কাছে প্রতিবাদ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ।নিষিদ্ধ এ্যান্টি-পার্সোনেল মাইন যুদ্ধক্ষেত্রে শুধুমাত্র মানুষ নিধনের জন্য ব্যবহৃত হয়, যা ট্যাংক-বিধ্বংসী মাইন থেকে আলাদা।

মানুষের পায়ের চাপ পড়লেই মাটিতে পেতে রাখা এ মাইন বিস্ফোরিত হয়। এদিকে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জালালউদ্দিন বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, তারা হাসপাতালে এ পর্যন্ত শতাধিক আহত রোহিঙ্গার চিকিৎসা দিয়েছেন যাদের মধ্যে অন্তত ১৫ ২০জন স্থল মাইনে আহত হয়েছেন।

"আমারা যেসব রোগী পেয়েছি, তার মধ্যে যারা বার্ন ইনজুরি নিয়ে এসেছে, তারা বোমা এবং মাইন বিস্ফোরণের কারণে আহত হয়েছেন। এমন অনেক পেয়েছি এবং আরো আসছে।"

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মিয়ানমারের সরকার পাল্টা অভিযোগ করছে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভ্যাশন আর্মি আরসা দেশটির অবকাঠামো এবং নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস ব্যবহার করছে।

রোহিঙ্গাদের নির্মূলের জন্য ল্যান্ডমাইন বসানোর ঘটনাকে `বর্ণনার অতীত` `হৃদয়হীন কাজ` বলে অভিহিত করে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ অবিলম্বে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে অ্যান্টি-পার্সোনেল ল্যান্ডমাইন ব্যবহার বন্ধ করে, ১৯৯৭ সালের মাইন নিষিদ্ধ সংক্রান্ত অটোয়া চুক্তিতে যোগ দেবার আহ্বান জানিয়েছে। বিবিসি বাংলা

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer