
ছবি: বহুমাত্রিক.কম
ঢাকায় বাংলাদেশ ও ভারতের অভিন্ন ঐতিহ্যের সুর আরও একবার ধ্বনিত হল উচ্চাঙ্গসংগীত আসরে। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার ছায়ানট মিলনায়তনে ‘প্রলয়সুন্দর’ শীর্ষক আড়ম্বপূর্ণ এ আয়োজনে উত্তরভারতীয় রাগসংগীতের মূল সুর ও সেই সুরে নিবদ্ধ নজরুলের গান পরিবেশন করেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিল্পীরা।
প্রয়াত শিল্পীদের প্রতি হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মার শ্রদ্ধা নিবেদন
সন্ধ্যা নামতেই ছায়ানটের সুপ্রশস্ত মিলনায়তন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে ভরে উঠে। মঞ্চে নজরুলের উন্মীলিত ডাগর চোখের সেই চিরচেনা ছবির দুই পাশে শোভা পায় এই অঞ্চলের কয়েকশ’ বছরের কালোত্তীর্ণ সংগীত কলাকারগণের ছবি। বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ড. মকবুল হোসেনের সঞ্চালনায় এই সংগীত আসর আয়োজনের প্রেক্ষিত তুলে ধরেন বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম।
শিল্পী সুমন চৌধুরীকে মানপত্র তুলে দিচ্ছেন অতিথিরা
এই অঞ্চলের সংগীত চর্চায় পরম্পরাগত প্রভাবের কথা উল্লেখ করে আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলা রাগপ্রদান গান মূলত উত্তরভারতীয় রাগসংগীতের দ্বারা প্রভাবিত। সমকালীন সংগীতের যে চর্চা তার ভিত্তিমূলে সেই অভিন্ন সুরের ঐতিহ্য জড়িয়ে রয়েছে। সংগীতের বিশুদ্ধতা বজায় রাখতে মূল সুর ও সেই সুরের আশ্রয়ে রচিত সংগীতের যুগল পরিবেশনার মধ্য দিয়ে আগামীর সংগীত চর্চা বেগবান করাই আয়োজনের মূল লক্ষ্য।’
কথা বলছেন প্রণয় ভার্মা
উচ্চাসংগীত আসর প্রলয়সুন্দরের প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘এই চমৎকার আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমরা অনুভব করতে পারলাম যে আমরা দুই দেশ পারস্পারিকভাবে কতটা জড়িয়ে রয়েছি। আমাদের অভিন্ন ঐতিহ্য রয়েছে। আমি কিছু সময়ের জন্য সত্যি ভুলে গিয়েছিলাম যে আমি বাংলাদেশে নাকি ভারতে রয়েছি। প্রকৃতঅর্থে এইই হচ্ছে সংগীতের শক্তি! এটিই অভিন্ন ঐতিহ্যের শক্তি।’
দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতে গলা মেলাচ্ছেন দর্শকাসনে থাকা বিশিষ্ট অতিথিরা
‘আমরা পারস্পারিকভাবে যুক্ত থাকতে এই অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের চর্চাকে এগিয়ে নেব। এটি আমাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ। উত্থান-পতন যাই ঘটুক না কেন আমাদের অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অটুট থাকবে এবং এটিই আমাদের সম্পর্ককে শক্তিশালী করবে’-বলেন ভারতীয় হাই কমিশনার।
শিল্পীদের সঙ্গে প্রধান অতিথিসহ অন্যরা
দেশের রাগপ্রধান গানের খ্যাতিমান শিল্পী সুমন চৌধুরীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠানে এদিন আরও সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী রেজাউল করিম, শিল্পী মুশফেক আহমেদ সজল, পুতুল দাস, কাকলী হালদার ও সুপর্ণা বণিক। তবলা সঙ্গত করেন স্যামসন, কী-বোর্ডে নরোত্তম শীল ও সারেঙ্গিতে শৌণক দেবনাথ ঋক।