Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

শ্রাবণ ১ ১৪৩২, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫

‘প্রিটি লিটল বেবি’ গায়িকা কনি ফ্রান্সিস আর নেই

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:১৫, ১৭ জুলাই ২০২৫

প্রিন্ট:

‘প্রিটি লিটল বেবি’ গায়িকা কনি ফ্রান্সিস আর নেই

ফাইল ছবি

কিংবদন্তি আমেরিকান গায়িকা কনি ফ্রান্সিস আর নেই। ৮৭ বছর বয়সে জনপ্রিয় গান ‘প্রিটি লিটল বেবি’-র এই গায়িকা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু রন রবার্টস এক ফেসবুক পোস্টে এই হৃদয়বিদারক খবর জানান।

কিছুদিন ধরেই শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন কনি। ২ জুলাই এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি আবারও হাসপাতালে আছি। আমার শরীরে চরম যন্ত্রণার কারণ খুঁজে বের করতে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।’ এর মাত্র দুই দিন পর, ৪ জুলাই তিনি জানালেন, ‘একটা ভালো রাত কাটানোর পর আমি অনেকটাই সুস্থ বোধ করছি।’ কিন্তু সেই আরোগ্যের আশারেখা শেষ পর্যন্ত অপূর্ণই রয়ে গেল।

এদিকে মৃত্যু সংবাদ দিয়ে রন রবার্টস লিখেছেন, ‘অত্যন্ত দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানাচ্ছি, আমার প্রিয় বন্ধু কনি ফ্রান্সিস গত রাতে মারা গেছেন। আমি জানি, কনি চাইতেন তাঁর ভক্তরাই এই দুঃসংবাদ সবার আগে জানুক।’

কনসেটা রোজা মারিয়া ফ্র্যাঙ্কোনেরো—এটাই ছিল কনির পুরো নাম। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯৩৭ সালের ১২ ডিসেম্বর, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে। ১৯৫৮ সালে 'হুজ সরি নাউ' দিয়ে সংগীতজগতে যাত্রা শুরু করেন তিনি। এরপর ‘স্টুপিড কিউপিড’, ‘লিপস্টিক অন ইয়োর কলার’, ‘মাই হার্ট হ্যাজ আ মাইন্ড অব ইটস ওউন’, ‘হয়্যার দ্য বয়েজ আর’— একের পর এক হিট গান তাঁকে পৌঁছে দেয় তারকাখ্যাতির চূড়ায়।

তিনি হয়ে ওঠেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী পপ আইকন, যিনি রক অ্যান্ড রোল যুগে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।

কনি শুধু ইংরেজি নয়— ইতালিয়ান, জার্মান, স্প্যানিশ, ফরাসি, হিব্রু, এমনকি জাপানি ভাষায় গান রেকর্ড করেছেন। গানের জনপ্রিয়তায় তিনি কখনো কখনো নিজ দেশ যুক্তরাষ্ট্রকেও ছাড়িয়ে গেছেন জার্মানি, ইতালি ও জাপানে।

১৯৫৭ থেকে ১৯৬৯ সালের মধ্যে তাঁর ৫০টির বেশি গান যুক্তরাষ্ট্রের মিউজিক চার্টে স্থান পেয়েছে। তাঁর রেকর্ড বিক্রির সংখ্যা ২০০ মিলিয়নেরও বেশি।২০০৯ সালে তাঁকে ইতালিয়ান হল অব ফেম-এ ‘সেলিব্রিটি ইনডাক্টি’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী পুরুষপ্রধান সংগীতশিল্প জগতে নারীদের জায়গা করে নেওয়াটা ছিল কঠিন। কিন্তু কনি ফ্রান্সিস ছিলেন সেই ব্যতিক্রম, যিনি নারী শিল্পীদের জন্য সুরের পথ উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। তাঁর আত্মবিশ্বাস, কণ্ঠের আবেগ এবং সাংগীতিক বিচিত্রতা অনেককে অনুপ্রাণিত করেছে।

৬৩ বছর আগে প্রকাশিত কনির গান ‘প্রিটি লিটল বেবি’ আজও নতুন প্রজন্মের ইনস্টাগ্রাম রিলসে বাজছে। কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের মুখে মুখে ফিরছে সেই পুরোনো সুর। এটা প্রমাণ করে—কোনো সত্যিকারের শিল্প কখনও পুরোনো হয় না।