ছবি: সংগৃহীত
ঘন কুয়াশার কারণে মঙ্গলবার সকালে উত্তর প্রদেশের মথুরায় দিল্লি-আগ্রা (যমুনা) এক্সপ্রেসওয়েতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে চারজন নিহত এবং ২৫ জন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় সাতটি বাস ও তিনটি গাড়ি একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দৃষ্টিসীমা অত্যন্ত কম থাকায় একের পর এক গাড়ি ধাক্কা খায় এবং এতে বহু যানবাহনে আগুন ধরে যায়। ফলে যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।
মথুরার সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (এসএসপি) শ্লোক কুমার দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান প্রায় শেষের পথে। বন্ধ হয়ে যাওয়া মহাসড়ক পরিষ্কার করার কাজ চলছে। পাশাপাশি আটকে পড়া যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকালে মথুরার যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় কমপক্ষে চারজন মারা গেছেন এবং ২৫ জন আহত হয়েছেন। ঘন কুয়াশার কারণে সাতটি বাস ও তিনটি ছোট গাড়ির মধ্যে এই সংঘর্ষ ঘটে।
তিনি আরও বলেন, আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন, এখনো কুয়াশা রয়েছে। এই কম দৃশ্যমানতার কারণেই প্রায় সাতটি বাস ও তিনটি গাড়ি একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা খায়। দুর্ঘটনার পর কয়েকটি গাড়িতে আগুনও ধরে যায়। উদ্ধার কার্যক্রম সম্পর্কে এসএসপি জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, উদ্ধার অভিযান প্রায় সম্পন্ন। এ পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা গেছে। তিনি আরও জানান, প্রায় ২৫ জনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে কেউই গুরুতর আহত নন। তারা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছেন। পাশাপাশি এখানকার বাকি যাত্রীদের সরকারি যানবাহনের মাধ্যমে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মথুরার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ডিএম) চন্দ্র প্রকাশ সিং দুর্ঘটনাটিকে খুবই দুর্ভাগ্যজনক বলে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, দুর্ঘটনার কারণ পরে তদন্ত করা হবে। তবে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার হচ্ছে উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। দুর্ঘটনায় নিহত চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ১২টির বেশি ফায়ার ইঞ্জিন এবং ১৪টিরও বেশি অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন করা হয়। আহতদের সিএইচসি বালদেব ও জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমরা নিশ্চিত করতে পারি, কেউই গুরুতর অবস্থায় নেই এবং সবাই আশঙ্কামুক্ত।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থলে থাকা বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের বাসের মাধ্যমে হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। ত্রাণ কার্যক্রম সুশৃঙ্খলভাবে চলছে এবং পুরো প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। কুয়াশা ও কম দৃশ্যমানতাই এই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। দুর্ঘটনার সুনির্দিষ্ট কারণ পরে তদন্ত করা হবে, আপাতত আমাদের মূল লক্ষ্য উদ্ধার কাজ। মথুরার এই দুর্ঘটনার ঠিক এক দিন আগেই, সোমবার ভোরে দিল্লি-মুম্বাই এক্সপ্রেসওয়েতে ঘন কুয়াশার কারণে প্রায় ২০টি যানবাহনের সংঘর্ষে আরেকটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। ভোর প্রায় ৫টার দিকে হওয়া ওই দুর্ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যসহ চারজন নিহত হন এবং আনুমানিক ১৫-২০ জন গুরুতর আহত হন।




