Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

আষাঢ় ১৭ ১৪৩২, মঙ্গলবার ০১ জুলাই ২০২৫

আমি বিশ্বাস করি, শিগগিরই রোহিঙ্গারা দেশে ফিরে যাবেন:প্রধানমন্ত্রী

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:৩২, ১০ জুলাই ২০১৯

প্রিন্ট:

আমি বিশ্বাস করি, শিগগিরই রোহিঙ্গারা দেশে ফিরে যাবেন:প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা : আমরা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। তাদের কারণে কক্সবাজারের প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, শিগগিরই রোহিঙ্গারা দেশে ফিরে যাবেন। অতি দ্রুততার সঙ্গে তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য আমি বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।`

বুধবার ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টোলে `ঢাকা মিটিং অব দ্য গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন`-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা সকলে অবগত আছেন, আমরা কক্সবাজার জেলায় মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি। কক্সবাজারের যেসব এলাকায় রোহিঙ্গারা অবস্থান করছে সেগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং তাদের উপস্থিতি এসব এলাকাকে আরও অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। এসব বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দেখভাল করার পাশাপাশি অতি দ্রুততার সঙ্গে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য আমি বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।`

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় বনায়ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া, জলাবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় `ডেল্টা প্ল্যান ২১০০` নামে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও হাতে নিয়েছে সরকার। এটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে উপকূলের লোকজনের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে।

তিনি বলেন, জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গত এক দশকে আর্থ-সামাজিক খাতে ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। সামনের দিনগুলোতে আর উন্নয়ন হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, অনুমিত সময়ের আগেই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব বাংলাদেশের ওপর পড়তে শুরু করেছে। এ প্রভাব মোকাবিলায় বিনিয়োগে বিশ্বকে আরও বেশি অগ্রাধিকার দিতে হবে। তিনি বলেন, `বর্তমানে এই বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-উদ্ভাবন ও অর্থায়নের যুগে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের অনেক সুযোগ রয়েছে যা সকলে সহজে কাজে লাগাতে পারি। তথাপি আমি বলতে চাই, অভিযোজনের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সেজন্য সুষ্ঠু প্রশমন ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে অভিযোজন প্রক্রিয়ার সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না।`

এ সময় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সবাইকে সজাগ থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশে একটি আঞ্চলিক অভিযোজন কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়টি বিবেচনা করতেও সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান।

জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর দুই দিনের বিশেষ আন্তর্জাতিক সভা গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে শুরু হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করছেন গ্লোবাল কমিশন অন এডাপ্টেশনের (জিসিএ) চেয়ারম্যান ও জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন। আজ বুধবার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আন্তর্জাতিক এই সেমিনারের আয়োজনে প্রধান দায়িত্ব পালন করছে পরিবেশ বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়। ওই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন কালের কণ্ঠকে জানান, আগামী সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্ক জাতিসংঘ সদরদপ্তরে জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্যোগে একটি বিশেষ ক্লাইমেন্ট সামিট অনুষ্ঠিত হবে।

এই সামিটকে সামনে রেখে ঢাকায় দুই দিনের জিসিএ`র এই সভা আয়োজন করা হয়। সভায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় অভিযোজন সংশ্লিষ্ট সক্ষমতা ও অবদান কীভাবে বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। এই সভায় চূড়ান্ত হওয়া অভিযোজন সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিশেষ ক্লাইমেট সামিটে উত্থাপন করা হবে। যে কারণে এই সভা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশের অভিযোজন প্রক্রিয়ায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশ জলবায়ুর অভিযোজনের ক্ষেত্রে অগ্রগামী। এ বিষয়ে বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ সরজমিনে পরিদর্শনের জন্য গ্লোবাল কমিশনের সদস্যরা আশ্রায়ন প্রকল্প, নদী ভাঙন রোধ ও গাজীপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করবেন।

কমিশন সদস্যদের মধ্যে বান কি মুন ছাড়াও বিশ্ব ব্যাংকের চিফ একিকিউটিভ অফিসার ক্রিস্টালিনা জর্জিভা, মার্শাল আইল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট হিল্ড হেইন, গ্লোবাল এনর্ভানমেন্টাল ফ্যাসিলিটি-এর প্রধান (সিইও) ড. নওকো ইশি, মেক্সিকোর সাবেক অর্থমন্ত্রী ড. জেসে এন্টনিও মিডে প্রমুখ।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer