বলিউডের অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুতের অকাল মৃত্যুর পর নানা বিষয় সামনে আসে। তার প্রেমিকা অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বিহারের পাটনার রাজেন্দ্রনগর থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন সুশান্তের বাবা কেকে সিংহ। রিয়া ছাড়াও তার ভাই শৌভিক চক্রবর্তীসহ পরিবারের আরও কয়েকজনও রয়েছে এই এফআইআরের আওতায়।
এদিকে একপ্রকার বাধ্য হয়েই নাকি রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে রেখেছিলেন সুশান্ত। সুশান্তকে রীতিমত ব্ল্যাকমেইল করতেন রিয়া চক্রবর্তী। সম্প্রতি এমনই বিস্ফোরক তথ্য সুশান্তের পরিবারের কাছে তুলে ধরেন তার আরেক বান্ধবী। যিনি নিজেও একজন অভিনেত্রী। তবে রিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলেও সুশান্তের ওই অভিনেত্রী বান্ধবী নিজের নাম প্রকাশ্যে আনতে চাননি। পিপিংমুনের প্রতিবেদনে সম্প্রতি এমনই তথ্য উঠে এসেছে।প্রতিবেদনে বলা হয়, সুশান্তের ওই অভিনেত্রী বান্ধবী সম্প্রতি দুবার পাটনায় গিয়ে অভিনেতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন। তাদের হাতে বেশকিছু তথ্য প্রমাণও তুলে দিয়েছেন তিনি। সুশান্তের সঙ্গে হওয়া হোয়াটসআপ চ্যাটও অভিনেতার পরিবারকে দেখিয়েছেন ওই অভিনেত্রী। একপ্রকার অসহায় হয়েই সুশান্ত তাকে হোয়াটসআপে এত কথা জানিয়েছিলেন বলে দাবি করেন তিনি।
তার দাবি, রিয়া একা নয়, তার বাবা-মা ও ভাই একপ্রকার সুশান্তকে নিজেদের জালে জড়িয়ে ফেলেছিল এবং তাকে বদ্ধ করে ফেলেছিল। এখানেই শেষ নয়, সুশান্তের বাড়িটি একপ্রকার রিয়ার পরিবার দখলই করে ফেলেছিল। দীর্ঘ সময় রিয়ার মা সন্ধ্যা চক্রবর্তী সেখানে থাকতে শুরু করেন। রিয়ার মায়ের উপস্থিতিতে সুশান্তের দম বন্ধ হয়ে উঠেছিল। রিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসতে চেয়েছিলেন সুশান্ত। তবে এ কথা তিনি জানালেই তাকে ব্ল্যাকমেইল করা হতো। সংবাদমাধ্যমের সামনে সুশান্তকে অপদস্ত করার ভয় দেখানোও হতো।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুশান্তের ওই বান্ধবী আরও জানিয়েছেন, সুশান্তের মোবাইন ফোন পুরোপুরি রিয়ার হেফাজতেই ছিল।
তাই আমার সঙ্গে কথা বলার পর সুশান্ত চ্যাট ডিলিট করে দিত। এমনকি আমার নম্বর, ডিটেলস রিয়ার কাছে লুকিয়ে রাখত সুশান্ত। ওর ক্রেডিট কার্ড রিয়াই ব্যবহার করত, এমনকি সেটা দিয়ে ৪ লাখ রুপি মূল্যের তিনটা ফোন কিনেছিল ও, যার মধ্যে দুইটা মোবাইল রিয়া ফ্ল্যাট ছেড়ে যাওয়ার সময় নিয়ে যায়।
সুশান্তের অভিনেত্রী বন্ধু জানান, সুশান্ত আমায় জানিয়েছিল, ওর আর কোনোকিছুর ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই, সবকিছুই রিয়ার হেফজতে। এমনকি বাড়ির পরিচারক, পরিচারিকা থেকে শুরু করে সবকিছুই। রিয়ার মা তার বাড়ির সব পরিচারকদের রাতারাতি বদলে দিয়েছেন। তিনি কিছু বলতে গেলেই রিয়ার মা একপ্রকার তাকে চুপ করিয়ে দিতেন, বলতেন, রিয়াই সবকিছু ঠিক করবে।
পিপিং মুনের প্রতিবেদন অনুসারে, সুশন্তের পুরনো দুই কর্মীকে নিয়েই ওই অভিনেত্রী বন্ধু পাটনায় গিয়েছিলেন। তারা সুশান্তের বাবা ও অন্যান্যদের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি জানান, সুশান্তের অ্যাকাউন্টের তথ্য থেকেই জানা যাচ্ছে, বিশাল পরিমাণ টাকা সরানো হয়েছে। তার কথায়, সুশান্তকে রিয়া তার পছন্দমত একটি গাড়ি কিনতে বাধ্য করেছিলেন, পরে তার হারিয়ে যাওয়া সেই গাড়ি ব্যবহার করছিলেন রিয়ার ভাই সৌমিক।
জানা গেছে, অভিনেত্রীর দেয়া সব তথ্য খতিয়ে দেখেন সুশান্তের দুলাভাই আইপিএস অফিসার ও পি সিং। তিনিই বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে পুরো বিষয়টা জানান। এরপরই সুশান্তের বাবার এফআইআর গ্রহণ করে বিহার পুলিশ।
গত ১৪ জুন বান্দ্রায় নিজের ফ্ল্যাট থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুতের দেহ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানায়, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধানের জন্য এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০ জনকে জেরা করেছে মুম্বাই পুলিশ। এদের মধ্যে রিয়া ছাড়াও রয়েছেন পরিচালক মহেশ ভাট, সঞ্জয়লীলা বানসালিসহ বলিউডের নামজাদা ব্যক্তিরা।