গত কয়েকদিনে আশঙ্কাজনক হারে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ময়মনসিংহ মহানগরীর ১১টি এলাকায় জনসাধারণের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। শুক্রবার (২৫ জুন) সকাল ছয়টা থেকে আগামী ১ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ চলবে। বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিধিনিষেধের আওতাধীন এলাকাগুলো হচ্ছে নগরীর মাসকান্দা (বাসস্ট্যান্ড), চরপাড়া, নয়াপাড়া, কৃষ্টপুর, আলিয়া মাদ্রাসা, নওমহল, আর কে মিশন রোড, বাউন্ডারি রোড, পাটগোদাম, কাঁচিঝুলি ও গাঙিনারপাড় এলাকা। গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব এলাকার সার্বিক কার্যাবলি/চলাচল (জনসাধারণের চলাচলসহ) বন্ধ ঘোষণা করা হলো।
তবে এ সময় শুধু আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিরতণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি/বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তাব্যবস্থা, ড্রাগ সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসগুলো, তাঁদের কর্মচারী ও যানবাহন এবং পণ্যবাহী ট্রাক/লরি নিষেধাজ্ঞার আওতাবর্হিভূত থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সভায় এলাকাভিত্তিক ‘আংশিক লকডাউনের’ এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহ জেলায় গতকাল ৫৭ জন, গত মঙ্গলবারে ৫৯ জন, সোমবারে ৫৯ জন, রোববারে ৫০ জন এবং শনিবারে ৬৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আজ পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ২২৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৮১ জনের। এ ছাড়া সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৫৮৮ জন। বর্তমানে ৫৫৮ জন আইসোলেশনে।
‘আংশিক লকডাউনের’ তথ্য নিশ্চিত করে করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসচিব সিভিল সার্জন নজরুল ইসলাম বলেন, ময়মনসিংহে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় জেলা কমিটির সদস্যরা সভা করে মহানগরীর আংশিক কিছু এলাকায় সাত দিনের জন্য লকডাউন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক আরো জানান, লকডাউন ঘোষিত এলাকায় দোকানপাট যানবাহন ও চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কাঁচাবাজার ও ওষুধের দোকান খোলা থাকবে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হবে না। লকডাউন কার্যকর করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা তৎপর আছেন।
বহুমাত্রিক.কম