ছবি : বহুমাত্রিক.কম
মৌলভীবাজার: আইনে নিষিদ্ধ থাকলেও কমলগঞ্জ উপজেলার লাঘাটা ও পলক নদীতে আড়াআড়িভাবে বাঁশের বেড়া (খাঁটি) দিয়ে চলছে মাছ শিকার। অবৈধ উপায়ে মাছ শিকারের ফলে মাছের প্রজনন ও গতি প্রবাহে মারাত্মক বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। নদী, খাল, জলাশয়ে বিলুপ্ত হচ্ছে মাছের আহরণ। ফলে মাছ সহ জলজ প্রাণী মারা যাওয়ায় প্রাকৃতিক মাছের উপস্থিতি হ্রাস পাচ্ছে এবং হাঁটবাজার সমুহ রয়েছে একমাত্র খামারি মাছের নিয়ন্ত্রণে।
সরেজমিন লাঘাটা নদীর কেওলার হাওর এলাকা ও পলক নদী ঘুরে দেখা যায়, উজানের ঢলের সাথে পলি-বালি জমে, ঝোপজঙ্গলে নদী গুলো ভরাট হয়ে ছোট্র খালে পরিণত হয়েছে।
উজানের ভারতীয় সীমান্তে পাহাড়ি এলাকা থেকে লাঘাটা নদীর উৎপত্তি হয়ে হাওরের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মনু নদীতে গিয়ে শেষ হয়েছে। এই নদীকে কেন্দ্র করে হাওর, বিল, জলাশয়ে দেশীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষিতে সেচের বাড়তি মাত্রা যুক্ত করেছে। তবে একটি সুবিধাভোগী ও স্বার্থাম্মেষী মহল এসব নদীতে বাঁশের বেড়া (খাঁটি), নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার, বিষ প্রয়োগ ও বর্ষা মৌসুমে কারেন্ট জাল পুতে জলজ প্রাণীর বিলুপ্ত ঘটাচ্ছে।
লাঘাটা ও পলক নদীর একাধিক স্থানে রয়েছে বাঁশের খাঁটি। ফলে মাছের অবাধ গতি ও পানি প্রবাহে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং খাঁচায় আটকে মাছ, ব্যঙ, সাপ, কুচিয়াসহ জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে। সম্প্রতি সময়ে উপজেলার নদী, খাল, জলাশয়ে মাছের বিরান দশা দেখা দিয়েছে। আর এর প্রভাব পড়ছে হাটবাজার সমুহে।
ধূপাটিলা গ্রামের কৃষক তুজা মিয়া, ফারুক মিয়া, কদর আলী, পতনঊষারের মনু মিয়া, মসুদ মিয়া বলেন, কয়েক বছর আগেও লাঘাটা নদী, কেওলার হাওরে প্রচুর দেশীয় মাছের উপস্থিতি দেখা গেলেও এখন মাছের বিরানভূমি চলছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় তারা নদী সেচ, বাঁশের খাটি স্থাপন করে মাছ শিকার করলেও এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। তারা আরও বলেন, যদি স্বার্থাম্মেষী মহলের অবৈধ পন্থায় মাছ শিকার বন্ধ করা যেত তাহলে চলতি মৌসুমে মনু নদীর মাছে লাঘাটা নদী ভরপুর হয়ে উঠতো। এভাবে স্থানে স্থানে বাঁশের দেয়ার কারণে মাছ উজানে উঠতে পারছে না।
সমাজকর্মী তোয়াবুর রহমান ও শিক্ষক মিছবাউর রহমান চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশে নদী, বিল সেচ দেয়া হয়, বাঁশের খাঁটি দিয়ে মাছ শিকার করা হয়, কারেন্ট জাল পোতা হয়, নদীতে বিষ ঢেলে দেওয়া হলেও কোন শাস্তি পেতে হচ্ছে না। ফলে অবৈধ পন্থায় মাছ শিকারের ফলে প্রাকৃতিক মাছ বিলুপ্ত হয়ে পড়ছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদ উল্লা বলেন, নদীতে বাঁশের খাটি দেয়ার কোন অভিযোগ আসেনি। তবে এখন সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক খাটি অপসারণ করা হবে।
বহুমাত্রিক.কম