
ছবি- সংগৃহীত
প্রথমবারের মতো দেশে কলাগাছের তন্তু থেকে সুতা তৈরি করে মণিপুরি শাড়ির উদ্ভাবন করেন রাধাবতী দেবী। অসামান্য অবদানের জন্য মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার নিজ গ্রামে তিনি সংবর্ধিত হলেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের ভানুবিল মাঝেরগাঁও গ্রামে ইন্দোবাংলা এবং ভানুবিল মাঝেরগাওঁ কমিউনিটি বেইজড ট্যুরিজম এর উদ্যোগে কলাগাছ থেকে কলাবতী শাড়ি উদ্ভাবক রাধাবতী দেবীকে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
ভানুবিল মাঝেরগাঁও কমিউনিটি বেইজড পরিচালক থৌওনাজম নিরঞ্জন সিংহের সভাপতিত্বে ট্যুরিজম এর হলরুমে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভারতের মণিপুর থেকে আগত ১৯ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মণিপুরি কালচারাল কমপ্লেক্সের সভাপতি জয়ন্ত কুমার সিংহ, কবি সনাতন হামোম, কিয়াম ইবচোউ সিংহ, অরুণ কুমার সিংহ, টিএইচ শ্যাম সিংহ, এন নবচন্দ্র সিংহ, জিতেন সিংহ, কেএইচ নিমাই সিংহ প্রমুখ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বান্দরবান জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে কমলগঞ্জের ভানুবিল মাঝেরগাঁও গ্রামের কৃতি সন্তান মণিপুরি তাঁতশিল্পী রাধাবতী দেবী কলাগাছের তন্তু থেকে প্রথমবারের মতো শাড়ি তৈরিতে সফল হন। তাঁর শাড়ির তৈরির বিষয়টি জানাজানি হলে সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে। নিজে চ্যালেঞ্জ নিয়ে ১৫ দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে কলাগাছের তন্তু থেকে শাড়ি তৈরি করেন। এজন্য রাধাবতী দেবী মণিপুরি সমাজ ও কমলগঞ্জ তথা মৌলভীবাজার জেলাবাসী গর্বিত ও আনন্দিত। রাধাবতির অবদানে মণিপুরি সমাজের ঘরে ঘরে আনন্দ-উল্লাস দেখা দিয়েছে।
মণিপুরি তাঁতশিল্পী ও কলাবতী শাড়ির উদ্ভাবক রাধাবতী দেবী বলেন, বান্দরবান জেলা প্রশাসকের ডাকে সাড়া পেয়ে শাড়িটি বুনেছি। আমার এলাকায় যারা মণিপুরি শাড়ি বুনেন, সবাই আমাকে বলেছিলেন এ দায়িত্ব না নিতে। তারপরও চ্যালেঞ্জ নিয়ে সফল হই। ১৯৭৫ সাল থেকেই সুতা দিয়ে শাড়িসহ নানা কিছু তৈরি করেছি। কিন্তু কলাগাছের সুতা দিয়ে শাড়ি তৈরি ছিল আমার কাছে একেবারেই নতুন। দীর্ঘ ১৫ দিনের চেষ্টায় আরো তিনজন সহযোগীকে নিয়ে তাঁতে বসে তৈরি করে ফেলি জামদানি ডিজাইনের কলাগাছের সুতা দিয়ে তৈরি শাড়ি।
সাধারণ সুতায় ৫০০ গ্রাম দিয়ে যেখানে একটি শাড়ি তৈরি করা যায়, সেখানে কলাগাছের সুতায় শাড়ি তৈরি করতে লাগে প্রায় এক কেজি। কলাগাছের সুতা তৈরিতে গবেষণা করে ভালো সুতা তৈরি করতে পারলে আরো ভালো মানের শাড়ি তৈরি করা যাবে। তিনি আরো বলেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে কলাবতী শাড়িটি বাজারজাত করা যাবে।