
ফাইল ছবি
দুসপ্তাহেরও কম সময়ে ফের শুক্রবার দিল্লি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কথা রয়েছে, জুলাইয়ের দ্বিতীয় ভাগে তার বেইজিং সফরেরও। কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, এবারের ভারত সফরে, দ্বিপক্ষীয় ইস্যু ছাপিয়ে গুরুত্ব পেতে পারে আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতি। একই সঙ্গে নতুন করে ক্ষমতায় আসা পুরোনো নেতৃত্ব অমীমাংসিত ইস্যুগুলো নিষ্পত্তিতে কতটা সফল হবেন, সেই চ্যালেঞ্জ থাকছে দুপক্ষেই।
ভারতে নরেন্দ্র মোদি নতুন করে সরকার গঠনের পর শুধু শপথ অনুষ্ঠানেই নয়, দ্বিপাক্ষিক সফরেও সরকার প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনাই আবার ভারতের প্রথম রাষ্ট্রীয় অতিথি হয়ে দিল্লি যাচ্ছেন।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা একই মাসে দুই নিকটতম প্রতিবেশী দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের এ সফর ও বৈঠকের বিষয়টিকে বলছেন নজিরবিহীন। কূটনৈতিক পাড়ার আলোচনা থেকে জানা যায়, শেখ হাসিনার এবারের দিল্লি সফর সংক্ষিপ্ত হলেও এর ব্যপ্তি হতে চলেছে সুদূরপ্রসারী।
কেননা, এ সফরে যতোটা না দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে, ঠিক ততোটা সমগুরুত্বে আলোচিত হতে পারে ভূ-রাজনৈতিক ও আঞ্চলিক কৌশলগত ইস্যুও। পাশাপাশি, দুই সরকার প্রধানই ক্ষমতা নবায়নের পর আগামীর সম্পর্ক কীভাবে আরো পোক্ত হবে, বর্তমানে ভারত সরকারে থাকা নীতনির্ধারকদের অন্দরের সে রাজনৈতিক বার্তাও ঢাকাকে দিতে পারে নয়াদিল্লি।
২০২২ সালের পর দুই প্রধানমন্ত্রী শনিবার আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে। ওই বৈঠকে প্রাধান্য পেতে পারে ঋণচুক্তি বাস্তবায়নের রূপরেখা চূড়ান্তকরণ, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য, কানেক্টিভিটি, তিস্তা চুক্তি, জ্বালানি সহযোগিতা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতার মতো বিষয়গুলো।
তবে, তিস্তায় চীনা বিনিয়োগের প্রস্তাবে বাংলাদেশের কিছুটা নীরবতা আর ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করার মধ্যেই ভারতের পাল্টা বিনিয়োগ প্রস্তাবে বিষয়টি অস্বস্তি তৈরি করেছে কিছু ক্ষেত্রে। বিশ্লেষকদের ধারণা, এবারের সফরে চুক্তি সই না হলেও এ বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান জানাতে পারে ভারত।
পরের মাসেই চীন সরকারের নিমন্ত্রণ রক্ষায় বেইজিং যাওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সেক্ষেত্রে শি জিনপিং এর সঙ্গে বৈঠকের আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি আলাদা বোঝাপড়াও হতে পারে ঢাকা ও বেইজিংয়ের মধ্যে।
সব মিলিয়ে, কাছাকাছি সময়ের মধ্যে এশিয়ার দুই শক্তিশালী রাষ্ট্রের সঙ্গে পরপর বৈঠকের সুযোগ বাংলাদেশকে কতটা এগিয়ে রাখবে -- সেটিই এখন দেখার অপেক্ষা। কেননা, চরম বৈরী ভাবাপন্ন ভারত-চীনের দ্বান্দ্বিক অবস্থানের মধ্যেও নিজের হিস্যাটুকু বুঝে নেয়ার কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ নিয়েই এগুতে হবে বাংলাদেশের নেতৃত্বকে।