ছবি- সংগৃহীত
সকালবেলায় মা ছেলে চা খাওয়ার সময়ে মাতৃদেবী সংসারের যাবতীয় দরকারি কথা সেরে নিতেন ছেলের সাথে। বেশিরভাগ সময়ে তাঁর চোখ দুটো স্ত্রীকে খুঁজে বেড়াত। মা সেটি বুঝতেন। মনে মনে রাগে ফুঁসতেন। তুই আমার পেটে জন্মেছিস। আমি তোর পেটে নই। তুই কী চাইছিস সেটি কী আমি বুঝি না ? ওটা হবে না। তবে মুখে কিছু প্রকাশ করতেন না।
বুচির মাকে দিয়ে নানাধরণের কাজের ফিরিস্তি দিয়ে পাঠাতেন বৌকে বলার জন্য। সূর্যশেখর তখন বুঝতে পারতেন কোর্টে যাওয়ার সময়েও প্রিয় মুখ দেখে যেতে পারবেন না। তাই মায়ের সাথে বৈষয়িক বিষয়ে আলাপে মন বসত না। কোর্টে যাওয়ার জন্য তৈরি হতে হবে বলে তৃষিত মন নিয়ে ঘরে চলে যেতেন। যেই ছেলে উঠে যেতেন , অমনি হেমাঙ্গিনী দেবী চিৎকার করে ডাকতেন
“বৌমা সূর্যের খাবার করেছ ? ছেলেটি না খেয়ে বের হবে ? এত বড়ো গুষ্ঠির খাবারের যোগান তো আমার ছেলেকেই করতে হয়”।
বুচির মা হাঁক দিয়ে বলত
“খাবার তৈরি। দাদাবাবু চান করে এসে বসলেই হলো”।
“ঐ আবাগীর বেটি বোবা নাকি ? উত্তর দিতে পারে না”?
স্নানঘর থেকে সূর্যশেখর সবই শুনতেন। আপনমনে হাতড়ে বেড়াতেন কেন মা এমন আচরণ করেন তাঁর বৌটির সাথে ? নিজে কষ্ট পেয়েছিলেন ঠাকুরমার কাছ থেকে তাই ? এইভাবেই শাশুড়ি বৌ সম্পর্ক পরম্পরায় চলতেই থাকবে ? ইম্পসিবল! আমি বেঁচে থাকতে নয়। আর আমার স্বর্ণ এমন মা-ই নয়। একেবারে খাঁটি সোনা। তেতো মন নিয়েই খেতে বসতেন। আর মা তদারকি করতেন। স্বর্ণলতা কাছে আসতেন না। মায়ের নির্দেশেই কোনো কোনো সময়ে কোনো তরকারি বা পোস্তোর বড়া দিতে আসত।
সূর্যশেখর ঐ সময়ের জন্য অপেক্ষা করতেন। স্বর্ণ তরকারি নিয়ে এলেই ঘোমটার ফাঁক দিয়ে স্ত্রীর আনত মুখখানি দেখতে চেষ্টা করতেন। কদাচিৎ চোখাচুখি হতো। দুজনেরই মন ভরে যেত। সূর্যশেখর সেদিন ফুরফুরে মেজাজে কোর্টে যান। মধুময় রাতের স্বপ্নে তাঁর দিনটি ভালোই কাটে। কিন্তু স্বর্ণ সকালবেলার কোনো কথা তুলতেই দেবে না। কখনো বেশি জোর করলে বলতো ‘মাতো !’ সূর্যশেখরের বুক চিরে দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে আসতো। মা যদি একবার মেয়েটিকে বোঝার চেষ্টা করতেন !
সূর্যশেখরের বড়োছেলে হিমাদ্রিশেখর প্রকৌশলী। পাশ করে নিজেই ফার্ম দিয়েছে। পাশ করেছে বেশিদিন হয়নি। মোটামুটি চলছে তার ফার্ম। মেজছেলে রাজশেখর আইনশাস্ত্র পাশ করে বাবার জুনিয়র হয়ে কাজ শুরু করেছে। আর ছোটো ছেলে চন্দ্রশেখর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন শাস্ত্রে সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র। সবার ছোটো মেয়ে মহাশ্বেতা এখনো কলেজের গন্ডী পার হয়নি। পরমাসুন্দরী দেখতে। অনেকটা মায়ের ডুপ্লিকেট। সূর্যশেখরের ইচ্ছে ছিল মেয়ের নাম কনকচাঁপা রাখতে। স্ত্রীর নামের সাথে সাযুজ্য রেখে। মা রাখতে দেননি।
বড়ো দুই মেয়ের বিয়ে আগেই দিয়েছেন। সেই সময়ে যেমন হতো তার তুলনায় কিছু দেরিতে। কেননা মা এবং প্রতিবেশিদের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে এন্ট্রান্স পাশ করিয়েছিলেন। মেয়েরা মেধাবী ছিল। কিন্তু বেশিদূর যেতে পারেনি। বিয়ের পরে বড়োমেয়ে ঊর্মিলার বর অনাদিশংকর ,পেশায় শ্বশুরের মতো উকিল হওয়া সত্ত্বেও বাড়ির ভিতরের পরিবেশের কারণে উঁচু কন্ঠে দাবি পেশ করতে সমর্থ হননি। এই কষ্ট আজও অনাদিকে কুরে কুরে খায়। মেজ মেয়ে অপরাজিতার বেলায়ও একই কারণ দেখিয়েছিল।
তবে ওর বর সত্যকাম অধ্যাপনায় থাকায় গোপনে স্ত্রীকে পড়িয়ে প্রাইভেটে বিএ পাশ করিয়েছেন। সেদিন সূর্যশেখর খুশিতে পাড়া প্রতিবেশি আত্মীয়স্বজন ,সহকর্মী সবাইকে মিষ্টি বিলিয়েছিলেন। এতে খুব খুশি হয়েছিলেন ওদের মা। কেননা স্বর্ণলতার নিজের খুব ইচ্ছে ছিল পড়াশোনার প্রতি। সংগত কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। তবে নাতনির পাশের খবরে এত আহ্লাদিপনার কোনো কারণ দেখতে পাচ্ছিলেন না হেমাঙ্গিনী দেবী। এত পাশ দিয়ে মেয়েছেলে কী করবে? জায়গা তো দুটো। আঁতুর ঘর আর হেঁসেল। সূর্যশেখর ব্যথিত নয়নে মায়ের দিকে এক ঝলক তাকিয়ে ওখান থেকে সরে এসেছিলেন।
এই সংসার খুব সুখের হতে পারত। কিন্তু হেমাঙ্গিনী দেবী যেন পণ করেছিলেন বৌকে শান্তিতে থাকতে দেবেন না। খুঁটিনাটি বিষয়ে সবসময় বৌকে গালমন্দ করতেই থাকেন। সন্তানদের সামনে যেন আরও বেশি চেষ্টা ছিল ওদের মা যে কোনো কম্মের নয় এটি প্রমাণ করা। বড়ো দুই মেয়ে আগেও ঠাকুরমার ন্যাওটা ছিল। এখন নিজেদের সংসারের চাপে খুব বেশি একটা আসা হয় না। তবে যখন আসে তখন ওরাও ,বিশেষ করে ঊর্মিলা ঠাকুরমার সাথে কন্ঠ মিলিয়ে কথা বলতে যায়। তবে দিনে দিনে কমে আসছে অনাদিশংকরের প্রভাবে।
অপরাজিতা দিদির আগেই পাল্টেছিল। বইপত্তর ঘাঁটতে ঘাঁটতে আর অধ্যাপক স্বামী সত্যকামের কল্যাণে। এতে অবশ্য পরিস্থিতির খুব পরিবর্তন হয়েছে তা নয়। হেমাঙ্গিনীরা বদলায় না। সেকালে হেমাঙ্গিনীদের সংখ্যা নেহাৎ কম ছিল না। বরং সূর্যশেখরদের কম দেখা যেত। বিশেষ করে গায়ে জমিদারীর গন্ধ থাকলে।এই হিসাবে স্বর্ণলতা সৌভাগ্যবতী ছিলেন। এই বিষয়টি হেমাঙ্গিনী খুব ভালোই বুঝতে পারতেন। নারীর সুখী চেহারা অন্য নারী যতটা পড়তে পারে আর কেউ ততটা পারে না।
এদিকে হিমাদ্রিশেখরের মনে যেন বসন্তের মাতাল সমীরণ বইতে শুরু করেছে। হঠাৎ করেই। এক বন্ধুর বাড়িতে যেতে হয়েছিল বন্ধুটির বারংবার অনুরোধে। পাশের ঘর থেকে অনেকগুলো মেয়ে গান করছিল। কোনো একটা ফাংশানের রিহার্সাল দিচ্ছিল। একটি মেয়ে লিড দিচ্ছিল। থেকে থেকে কাঁচ ভাঙা শব্দের মতো হাসির দমকে গড়িয়ে পড়ছিল যেন। কে হাসছিল সেটি পরে বুঝতে পেরেছিল বন্ধু অতীন যখন ধমকে উঠল বোনকে।
“এত হাসির কী হয়েছে শুচি ? বাবাকে বলে তোর একটা ব্যবস্থা করতে হবে দেখছি। দেখব শ্বশুরবাড়িতে কত হাসতে পারিস”?
“যে বাড়িতে হাসতে পারব না ,তেমন বাড়িতে যাবই না”। বলেই আবার খিলখিল হাসিতে ভেঙে পরলো।
হিমাদ্রিশেখর মেয়েটির এমন কথা শুনে ভড়কে গেল। ওরে বাবা কী জাঁহাবাজ মেয়ে !
“বাবা আদর দিয়ে দিয়ে বাঁদর বানিয়েছেন”।
“আমি জেঠুকে বলে দেব তুমি তাঁকে বাঁদর বলেছ”।
“কী বললি”?
ওদিক থেকে রিনরিনে হাসির শব্দ ভেসে এল। ঐ হাসি যেমন হিমাদ্রির বুকের ভিতর উথাল পাতাল ঢেউ তুলছিল ,তেমনি ওদের ভাইবোনের সম্পর্ক দেখে অবাক হচ্ছিল। ওদের নিজেদের ভাইবোনদের মধ্যে তেমন কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু কেন যে ঠাকুরমা মায়ের সাথে এমন আচরণ করেন,ওদেরকে নানা ছুতো নাতায় মায়ের থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেন … অথচ বাবা কিছু বলেন না। মা তো সবকিছু মেনেই নেন নীরবে। এতদিন এতকিছু নিয়ে ভাবত না। আজ কেন জানি খুব মনে হলো দুই বাড়ির পরিবেশ দুই রকম। আরও কিছুক্ষণ থেকে হিমাদ্রি যখন অতীনের সাথে বের হয়ে এল ওর ঘর থেকে ,তখন অতীন কেন জানি বোনকে ডাকল
“শুচি এদিকে আয় তো”।
“কেন” ?
“শুনে যায়”।
“আমরা রিহার্সালে ব্যস্ত”।
“ও আমার জানা আছে কত ব্যস্ত তোমরা। সারাদিন শুধু হাহা হিহি ছাড়া আর কিছু করতে তো দেখি না”।
“বলো কী বলবে”? ভিতর থেকে বলতে বলতে এসে হিমাদ্রিকে সামনে দেখে একটু থমকালো যেন।
“আচ্ছা যা। পরে বলব”।
“মানে”? বলেই এমনভাবে তাকাল একবার নিজের দাদার দিকে,আর একবার হিমাদ্রির দিকে … যেন বা আকাশে বিজলি চমকালো। হিমাদ্রির তাই মনে হলো।ও অতীনের এমন করার কারনও খুঁজে পেলো না। পরে অবশ্য জেনেছিল অতীন যা করেছিল ওর বাবার সাথে কথা বলেই করেছিল।
ততক্ষণে হিমাদ্রি বুঝতে পেরেছিল এই মেয়েটির হাসিই শুনতে পেয়েছিল। অতীনকে ও স্কুল থেকেই চেনে। কাছাকাছি পাড়াতেই থাকত ওরা। এখন অবশ্য দুই পরিবারই খুলনা শহরেই থাকে। অতীন একটু খামখেয়ালি টাইপের। সেই সময়ে বিবাহযোগ্যা বোন থাকলে বন্ধুদের বাড়িতে আনা একরকম অলিখিতভাবে নিষেধ ছিল। মেয়েটিকে আগে কখনো দেখেছে বলে মনে পড়ছে না। এতক্ষণ হাসি শুনেই বুকের ভিতরটা কেমন করছিল। আর এখন হঠাত নীলাকাশে বিদ্যুৎ চমকানো দেখে হিমাদ্রির বেহুঁশ অবস্থা।
মেয়েটি যাবার সময় হিমাদ্রির দিকে আর এক পশলা বিজলির চমক দেখিয়ে গেল। হিমাদ্রিশেখর তার নামের অর্থ ভুলে গিয়ে বিজলির আঘাতে ধরাশায়ী হয়ে পড়ল। এখন অতীন যদি জোর করে বোনের বিয়ের ব্যবস্থা করে ফেলে? তাহলে? দুঃশ্চিন্তায় ওর কয়েক রাত ঘুম হলো না। চোখ বুজলেই ঐ দুটি চোখ দেখতে পায়। কী ছিল সেই চোখে ?
কী জানাতে চেয়েছিল নয়ন দুটি অশনি ঝরিয়ে ? আর দুই কানে সবসময় বাজে রিনিঝিনি হাসির শব্দ। রক্ষণশীল পরিবারে বেড়ে ওঠা পেশায় প্রকৌশলী হিমাদ্রিশেখর কী বাড়ির নিয়ম ভাঙতে পারবে?নিজের বিয়ের কথা নিজে তুলবে? কিন্তু কার কাছে ? বড়ো জামাইবাবুকে বলবে? বড়দিটা আবার কিছুটা গোড়া টাইপের। মেজদি ঠান্ডা মাথার মানুষ। এইরকম এক সময় এক রাতে মা এসে উপস্থিত ওর ঘরে। মাকে দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইল হিমাদ্রি ,ওর বাবা মায়ের কাছে হিমু।
“মা আপনি”?
“কেন আসতে নেই”?
“না না। তা বলিনি। আপনি তো আসেন না আমাদের ঘরে”।
“তোর কাজে কোনো সমস্যা হচ্ছে হিমু? ইদানীং তোকে কেমন অন্যমনস্ক দেখায়”। উদ্বিগ্ন কন্ঠে বললেন স্বর্ণলতা
“না মা তেমন কিছু নয়”। হিমু ঠিক বুঝতে পারছিল না মাকে বলে কতটা কাজ হতে পারে। ক্ষমতা সব তো ঠাকুরমার হাতে।
স্বর্ণলতা মৃদু হেসে ঘর থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় বললেন
“তেমন কিছু হলে তোর বাবার সাথে কথা বলে নিস”।
মা চলে যাওয়ার পর হিমাদ্রির মনে হলো মাকে বললেই হতো। ঠাকুরমা মাকে যতই গালমন্দ করুক না কেন ,মায়ের ভিতরে আলাদা একটি শক্তি আছে বলে ওর বিশ্বাস। তা নাহলে এত কথা শুনেও মায়ের মুখ সবসময় স্নিগ্ধ থাকে কীভাবে ? এখন আফসোস হচ্ছে।
তবে ছয় ফিট লম্বা ,গৌরবর্ণের সুপুরুষ হিমাদ্রিকে দেখে শুচিস্মিতা নিজেই পটে গিয়েছিল। যেন স্বপ্নের রাজকুমার ছিল সে। হিমাদ্রি খোঁজ খবর নিয়ে মাকেই মনের কথা জানিয়েছিল দিন কয়েক পরে। মানে জানাতে হয়েছিল। হিমুর আনমনা ভাব মায়ের চোখকে ফাঁকি দিতে পারেনি। তাই মা আবার নিজেই এলেন জানতে ছেলের কী হয়েছে ?
কেননা শাশুড়ি কিছুদিন থেকে তাঁর এক বোনের নাতনির সাথে হিমুর বিয়ের কথা ছেলের কানে দিয়েই যাচ্ছিলেন। সূর্যশেখর রাতের শয্যায় স্ত্রীকে কাছে টেনে নিয়ে জানতে চেয়েছিলেন ওর মতামত। স্বর্ণ কিছুক্ষণ মৌণ থেকে বলেছিলেন হিমুকে জিজ্ঞেস করতে।স্ত্রী পাগল সূর্যশেখরের স্বর্ণের মনের কথা পড়তে সময় লাগেনি। তাই মা এরপরে কথা তুললে বলত
“সবে তো ব্যবসা দাঁড় করাচ্ছে। একটু সময় দাও ওকে”।
“তা সময় নিক না। কথায় আছে না লাখ কথা না হলে বিয়ে হয় না। জয়শ্রীর মাকে বলে রাখি ওর জন্য ছেলে দেখার প্রয়োজন নেই। বড়ো বড়ো পাশ দিয়েছে (আই এ পাশ করেছে)। রূপেগুণে (অনেকটাই বাড়িয়ে বলা) আমার নাতির পাশে খুব সুন্দর মানাবে”।
“ওর মাকেই যদি বলে দাও তাহলে লাখ কথা হলো কই”?
“ওঃ তোর মত নেই ? নাকি ওই আবাগীর বেটি কলকাঠি নাড়াচ্ছে”?
“মা স্বর্ণ আমার বিয়ে করা স্ত্রী। তুমি ওকে এভাবে ডাকো আমার শুনতে ভালো লাগে না”বলেই মাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে এলেন মনে একরাশ প্রশান্তি নিয়ে। এতদিনে পেরেছেন তাঁর অতি প্রিয়জনের সম্মান কোথায় সেটি মাকে জানাতে। এতে হয়তো বা স্বর্ণের ওপর অত্যাচার আর এক দফা বাড়তে থাকবে। তেমনি সূর্যের দিক থেকে প্রতিবাদও যেতে থাকবে। অনেক হয়েছে। আর নয় এটা মাকে বুঝতে দিতে হবে। পিছন ফিরলে দেখতে পেতেন হেমাঙ্গিনী দেবী স্তম্ভিত হয়ে তাকিয়ে আছেন তাঁর শিবরাত্রির সলতের চলে যাওয়ার দিকে। (চলবে...)
-লেখক