ফাইল ছবি
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, ‘সমালোচনার ভয়ে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে সরকার পিছপা হবে না। ভালো কিছু করতে সরকার দৃঢ়তার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেবে।’ শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে চট্টগ্রামের স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকরা নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমালোচনা-অপপ্রচার ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মন্ত্রীর করণীয় জানতে চাইলে তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের চ্যালেঞ্জটা একটু কমপ্লেক্স। সরকারে থাকলে চ্যালেঞ্জ একটু কমপ্লেক্স হয়। আর হ্যাঁ, কিছু সমালোচনা হবে। সেই সমালোচনা নেওয়ার সক্ষমতা রাজনীতিবিদদের থাকতে হবে। সক্ষমতা আমাদের আছে। আমরা সেটা পারব। আমাদের সিদ্ধান্তগুলো শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া হয়েছে। শুধু সমালোচিত হবে এই ভয়ে যে সিদ্ধান্ত যথার্থ এবং সঠিক সেটা নেব না, তা হতে দেওয়া যায় না। দৃঢ়ভাবে কিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন আমাদের অবশ্যই করতে হবে। এটার কোনো বিকল্প নেই।’
চলতি বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। আগামী শিক্ষাবর্ষে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও নতুন শিক্ষাক্রমে পড়বে। নতুন শিক্ষাক্রমে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা না রাখা, এসএসসির আগে পাবলিক পরীক্ষা না নেওয়া, নবম-দশম শ্রেণিতে বিভাগভিত্তিক বিভাজন তুলে দেওয়াসহ একগুচ্ছ পরিবর্তন আনা হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রমে।
এ সব বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, পরীক্ষা ও মুখস্থ নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে এসে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শেখার মাধ্যমে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠ প্রক্রিয়া হয়েছে আনন্দময়। তবে পরীক্ষা কমানো, বিভাগ বিভাজন তুলে দেওয়া, মূল্যায়ন পদ্ধতিসহ শিক্ষাক্রমের বিভিন্ন দিক নিয়ে সমালোচনা করছেন অনেকে।
এই সমালোচনার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘একটা চ্যালেঞ্জের বিষয় হচ্ছে আসলে, নেগেটিভ জিনিস ভাইরাল হয় বেশি। নেগেটিভ প্রচারণার প্রতি আমাদের দৃষ্টি বেশি থাকে। নিজেরাও অনেক সময় অজান্তে নেগেটিভ প্রচারণাতে জড়িয়ে পড়ি। সেটা কাউন্টার করাটা সারা বিশ্বব্যাপী একটা চ্যালেঞ্জ।’
শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে তার কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা, ক্ষমতার দম্ভ, অহংকার এ ধরনের কাজে আমি বিশ্বাস করি না। আমার বাবা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী সাড়ে ১৬ বছর চট্টগ্রামের মেয়র ছিলেন। আমি দেখেছি কীভাবে তিনি জনসেবা দিয়েছেন। প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় তিনি ছিলেন। শেখ হাসিনা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছেন। রাজনৈতিক ক্ষমতা- আমি যেহেতু শৈশব থেকে দেখে এসেছি সেগুলোর প্রতি তাই আমার কোনো লোভ-লালসা নেই।’
এই সরকারকে জনসেবায় কিভাবে আরও বেশি করে কাজে লাগানো যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বিশেষ করে তরুণ সমাজকে কীভাবে আরও কর্মমুখী করতে পারি, শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও বেশি ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে, অর্থনৈতিক সম্পৃক্ত করতে পারি সে লক্ষে আমরা কাজ করব।’