অনলাইন লেনদেনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। এ লক্ষ্যে ব্যাংকগুলো তথ্যপ্রযুক্তি হালনাগাদ করছে।একই সঙ্গে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট ও ইমেইল খুলে প্রতারণা প্রতিরোধে প্রায় ২০০ ভুয়া বা (ফিশিং) ওয়েবসাইট বা ইমেইল বন্ধ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জাতীয় কম্পিউটার ইনসিডেন্ট টিম (সার্ট) সূত্র জানায়, ৬ মে গুগল অ্যানড্রয়েড, অ্যাপল কোম্পানির বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তিগত পণ্য ও এক্সিম মেইল সার্ভারে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
এসব পণ্য যারা ব্যবহার করেন তাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে বলে দেওয়া হয়েছে, ভাইরাস অপসারণের পদ্ধতিও। বিভিন্ন দেশে এসব পণ্যে ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর ভিত্তিতে সার্ট অনুসন্ধন করে বাংলাদেশেও এটি পায়।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ও সার্টের প্রকল্প পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহ বলেন, বিশ্বব্যাপী এখন নতুন নতুন হ্যাকার গ্রুপ দাঁড়িয়ে গেছে। তারা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্য করে সাইবার হামলা চালাতে নানাভাবে তৎপরতা চালায়। এ কারণে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নতুন কোনো ভাইরাসের অস্তিত্ব পেলে তা সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, হ্যাকার গ্রুপগুলো এখন বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যারে ঢুকে হামলার চেষ্টা করছে। এর আগে গুগলের ইমেইল দিয়ে অ্যানড্রয়েড ফোনের মাধ্যমে হামলার চেষ্টা করেছে। মাইক্রোসফটের সার্ভারে ঢুকেছে। এগুলো অপসারণ করা হয়েছে।
রেসপন্স সার্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক হ্যাকার গ্রুপগুলো প্রতিনিয়ত বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে নানা ধরনের ভাইরাস ছাড়ছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হুবহু নকল বা ফিশিং ওয়েবসাইট বা ইমেইল তৈরি করে সেগুলোর মাধ্যমে গ্রাহকদের প্রতারিত করছে। এসব কারণে বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে সব সময় সতর্ক থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সার্ট ভারত, নরওয়ে, পোল্যান্ডসহ বিশ্বের ২০টির বেশি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে দেশে-বিদেশে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা কমিউনিটির সঙ্গে সমন্বয় ও সম্পর্ক বজায় রেখে আন্তর্জাতিক সাইবার ইস্যুতে বাংলাদেশ ফোকাল পয়েন্ট হিসাবে কাজ করে।
সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্ষদ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যাংকের সাইবার নিরাপত্তা বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সম্প্রতি সাইবার সিকিউরিটি ইউনিট গঠন করা হয়েছে। এতে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি স্থাপনের জন্য বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি কিনতে টেন্ডার আহ্বান করেছে। এছাড়া অনলাইনে চেক লেনদেনের জন্য বাংলাদেশ অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউজ, অনলাইনে সব ব্যাংকের লেনদেনে সম্পন্ন করতে রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট পদ্ধতিকেও আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এটিএম বুথের নিরাপত্তায় ব্যাংকগুলো তাদের সিস্টেমসে আধুনিক সফটওয়্যার সংযোজন করার প্রক্রিয়াটি চলমান রেখেছে। এ ব্যাপারে জাতীয় সার্ট থেকে ব্যাংকগুলোকে সার্বক্ষণিকভাবে হালনাগাদ করা হচ্ছে। এটিএম বুথে সিসি ও আইপি ক্যামেরা বসিয়ে সব ধরনের কার্যক্রমের রেকর্ড রাখা হচ্ছে।