
ফাইল ছবি
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভাষাসৈনিক ও গবেষক আহমদ রফিকের স্বাস্থ্য পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। তিনি এখন ‘জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে’ আছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকার পান্থপথের হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী।
আহমদ রফিককে যখন গত ১১ সেপ্টেম্বর হেলথ এন্ড হোপ হাসপাতালে আনা হয়, তখন তাকে এইচডিইউ বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। পরে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে তাকে বেডে স্থানান্তর করা হয়।
এর আগে এক মাসে দুই দফা ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন আহমদ রফিক। ১২ সেপ্টেম্বর পান্থপথের হেলথ এন্ড হোপ হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই কাটে তার ৯৭তম জন্মবার্ষিকী।ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘আহমদ রফিকে দুচোখের আলো নিভে গিয়েছে। এখন ডাকলে সাড়া দেন, কথা বলেন। কিন্তু তার কথা বোঝা যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিনি জীবন এবং মৃত্যুর মাঝে ঘোরতর যুদ্ধরত। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্রনিক কিডনি ফেইলিওর, আলঝেইমার্স রোগ, পারকিনসন্স রোগ, ইলেকট্রোলাইটস ইমব্যালেন্স, বেডশোর, ফুসফুসের সংক্রমণে ভুগছেন তিনি।’
আহমদ রফিকের জন্ম ১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহবাজপুর গ্রামে। মুন্সিগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর রসায়নে পড়তে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু ফজলুল হক হলের আবাসিক সুবিধা না পাওয়ায় পরে ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেল কলেজে।
১৯৫২ সালে তৃতীয়বর্ষে পড়ার সময় ফজলুল হক হল, ঢাকা হল এবং মিটফোর্ডের ছাত্রদের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে চলার কাজ করেছেন তিনি। পাশাপাশি সভা-সমাবেশ মিছিলে ছিলেন নিয়মিত।১৯৫৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের আন্দোলনকারী ছাত্রদের মাঝে একমাত্র তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।
১৯৫৫ সালের শেষ দিকে প্রকাশ্যে বেরিয়ে এসে পড়াশোনায় ফেরেন আহমদ রফিক। এমবিবিএস ডিগ্রি নিলেও চিকিৎসকের পেশায় যাননি।১৯৫৮ সালেই আহমেদ রফিকের প্রথম প্রবন্ধের বই ‘শিল্প সংস্কৃতি জীবন’ প্রকাশ হয়। তারপর লেখালেখিতেই জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন। পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, রবীন্দ্রত্ত্বাচার্য উপাধিসহ অনেক সম্মাননা।