
ঢাকা : দুর্নীতির মামলায় সর্বোচ্চ আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানিতে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের হট্টগোল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ছয় সদস্যের আপিল বেঞ্চে ওই আবেদনের শুনানির সময় হট্টগোল হয়। এ সময় প্রধান বিচারপতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাড়াবাড়ির একটা সীমা আছে। এমন পরিস্থিতি আমরা আগে কখনও দেখিনি।এজলাসে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আপনারা যা করেছেন তা নজিরবিহীন।
খালেদা জিয়ার বিষয়ে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে বিএনপির এক আইনজীবীর করা বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কে কী বলেছেন আমরা তা দেখবো না। আমরা কাগজ না দেখে বিচার করব না।’এর আগে সকাল থেকেই শুনানিতে অংশ নিয়ে আদালতে হইচই করেন বিএনপির আইনজীবীরা। দফায় দফায় হট্টগোল করে স্লোগানও দেন তারা।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্ধারিত দিন ছিল বৃহস্পতিবার।এদিন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ছয় সদস্যের বেঞ্চে প্রতিবেদন জমা দিতে সময় আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। আদালত আগামী ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদনটি জমা এবং এ বিষয়ে শুনানির জন্য ১২ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করেন।
এরই এক পর্যায়ে হইচই শুরু করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। এতে বিব্রত হয়ে বিচারপতিরা এজলাস কক্ষ ত্যাগ করে খাস কামরায় চলে যান। এরপর আদালতে অবস্থান নিয়ে দফায় দফায় হট্টগোল করেন বিএনপিপন্থি আইজীবীরা।কিছু সময় বিরতির পর আবার শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা পরবর্তী শুনানির দিন আগামী ১২ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ৮ ডিসেম্বর করার আবেদন জানান। কিন্তু তবে আপিল বেঞ্চ জানিয়ে দেন সেটি সম্ভব নয়।
বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের হট্টগোলের সময় আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরা সেখানে ছিলেন। ওই সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আদালতকক্ষ থেকে কাউকে বের হতে বা ঢুকতে দিতে চাইছিলেন না। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘বেইল ফর খালেদা জিয়া’- বলে তখন তারা স্লোগান দিতে থাকেন। বিএনপির আইনজীবীদের হট্টগোলের মধ্যেই এজলাসে কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।
এরআগে গত ২৮ নভেম্বর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানতে ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন দাখিল করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।