ছবি-অনন্যা’র সৌজন্যে
ঢাকা : দশটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে সমাজকে এগিয়ে নেয়ার স্বীকৃতি হিসেবে এবার ১১ জন বিশিষ্ট নারীকে দেয়া হল ‘অনন্যা শীর্ষদশ ২০১৫ সম্মাননা’।
শনিবার ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের এই সম্মাননায় ভূষিত করা হয়।
কৃতী নারীদের দেয়া হয় উত্তরীয়, ক্রেস্ট ও সনদপত্র। অনন্যার সম্পাদক ও প্রকাশক তাসমিমা হোসেনের সঞ্চালনায় সম্মাননা তুলে দেন নারী আন্দোলনের তিন বিশিষ্ট নেত্রী মাহফুজা খাতুন, খুশী কবির এবং ডা. দীপুমণি।
এবারের সম্মাননাপ্রাপ্ত বিশিষ্ট নারীরা হলেনÑ
লুভা নাহিদ চৌধুরী (সাংগঠনিক দক্ষতা), সোনিয়া বশির কবির (প্রযুক্তিপেশা), ওয়াসফিয়া নাজরীন (পর্বতারোহণ), মালিহা এম কাদির (উদ্যোক্তা), অণিমা মুক্তি গোমেজ (সংগীত), সুপ্রীতি ধর (সাংবাদিকতা), মাবিয়া আক্তার ও মাহফুজা খাতুন (খেলাধুলা), অপর্ণা ঘোষ (চলচ্চিত্র), উম্মে তানজিলা চৌধুরী মুনিয়া (শিক্ষা) এবং সাহিদা আক্তার স্বর্ণা (সমাজকর্ম)।
লুভা নাহিদ চৌধুরী বলেন, সমাজে আরো অনেক যোগ্য নারী আছে, আশা করি অনন্যা তাদের খুঁজে বের করে সম্মানিত করবে।
সোনিয়া বশির কবির বলেন, আমার ক্ষেত্র প্রযুক্তি। এই ক্ষেত্রে এখনো পুরুষের প্রাধান্য বিদ্যমান। আশা করি আমার মতো আরো অনেক নারী এই ক্ষেত্রে এগিয়ে আসবেন।
অনিমা মুক্তি গোমেজ বলেন, একসময় লোকসংগীতশিল্পীদের কিছুটা হেয় চোখে দেখা হত। তাদের সম্মাননা দেওয়া মহান একটি কাজ।
মালিহা এম কাদির অনন্যা সম্মাননা প্রদানের বিষয়টি প্রশংসা করে বলেন, মেয়েদের কাজের ক্ষেত্রে একটি রোলমডেল থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
সুপ্রীতি ধর বলেন, উইমেন চ্যাপ্টারে সাহসী নারীরা একটা প্লাটফর্ম পেয়েছেন। আমার মনে হয় আজকের এই অর্জন আমাদের শক্তি ও প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।
মাহফুজা খাতুন সাঁতারে সাফগেমসে স্বর্ণজয়ের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ক্রীয়াক্ষেত্রে নারীদের জন্য আরো সুযোগ সৃষ্টির জন্য অনুরোধ করেন।
মাবিয়া আক্তার বলেন, নারীদের খেলাধুলার ক্ষেত্রে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির বদল হওয়া খুব দরকার।
অপর্ণা ঘোষ বলেন, আমি নারী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবেই কাজ করে যেতে চাই।
উম্মে তানজিলা চৌধুরী মুুনিয়া বলেন, যৌনহয়রানীর সবচেয়ে বেশি শিকার হন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধি নারীরা। প্রতিবন্ধিদের সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি সমাজের কাছে দাবি জানান।
বাল্যবিবাহ বন্ধে প্রতিবাদী তরুণী সাহিদা আক্তার স্বর্ণা বলেন, আমি চাই বাংলাদেশে হাজার হাজার স্বর্ণা-মালালা তৈরি হোক।
অনুষ্ঠানে সম্মাননা পাওয়া নারীদের নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর সঙ্গে ছিল সাধনা নিবেদিত নৃত্যানুষ্ঠান এবং ভাবনগর পরিবেশিত চর্যাপদের গান। এবারের শীর্ষদশ সম্মাননা পাওয়া কণ্ঠশিল্পী অণিমা মুক্তি গোমেজও লোকসংগীত পরিবেশন করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সাল থেকে অনন্যা শীর্ষদশ সম্মাননা দেয়া হচ্ছে । প্রতিবছর নিজ নিজ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে দেশের ১০ জন বিশিষ্ট নারী এই সম্মাননা দেয়া হয়।
বিগত ২২ বছরে ২২০ জন কৃতী নারী পেয়েছেন এই সম্মাননা। শীর্ষদশ সম্মাননা-প্রাপ্ত ২২০ নারীর অর্জন ও জীবনসংগ্রাম নিয়ে প্রকাশিত অনন্যা শীর্ষদশ কফি টেবিল বুকের দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে এবার।