গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুরে এক শিক্ষার্থীর সাথে মুঠোফোনে অশ্লীল কথা বার্তার জেরে মাতব্বরদের ধার্য করা ত্রিশ হাজার টাকা দিতে না পেরে হাবিব রানা নামের এক যুবক আত্মহত্যা করেছে।
নিহত হাবিব রানা (২২) বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার বড়বাড়িয়া গ্রামের আবুল কালাম শেখের ছেলে। সে শ্রীপুর পৌর এলাকার দক্ষিণ ভাংনাহাটি গ্রামের মৃত আলা উদ্দিনের ছেলে মনির হোসেনের বাড়ির ভাড়াটিয়া। ওই বাড়িতে ভাড়া থেকে সে স্থানীয় হ্যাম্স গার্মেন্টস লিমিটেডে চাকুরী করতো।
শিশুটির বাবা জানান, পরিবাবরসহ মনির হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় ভাবে দিনমজুরের কাজ করেন তিনি। পারিবারিক কারণে তিনি তার স্ত্রীর মুঠোফোনে অটো রেকডিং চালু রাখতেন। তাদের পাশের কক্ষেই ভাড়া থাকতেন হাবিব রানা। মাঝে মধ্যে তার মেয়ের জন্য মজাদার খাবার কিনে আনতো হাবিব। শনিবার রাতে তিনি কাজ থেকে ফিরে ফোনের অটো রেকর্ডিংয়ে হাবিব ও তার মেয়ের বিভিন্ন আপত্তিকর কথা শুনতে পান। এসময় তিনি হাবিবকে এব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ ও বিষয়টি বাড়ির মালিকসহ স্থানীয়দের জানান।
নিহতের বড় ভাই মো: মফিজুর রহমান জানান, তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করেন। শনিবার রাত ৯টার দিকে বাড়ির মালিক মনির হোসেন বিষয়টি তাকে জানান। দ্রুত ঘটনাটি মীমাংসা না করলে তার ভাইকে থানা পুলিশের কাছে দেয়া হবে বলে জানানো হয়। ঘটনা শুনে রাতেই তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে শ্রীপুর চলে যান।
পরে স্থানীয় আব্দুস ছালামের ছেলে মোজাম্মেল হক, তার সহযোগী জহির, বাড়ির মালিক মনির, নবী হোসেন ও চান মিয়া ঘটনার মীমাংসা করে দেয়ার বিনিময়ে ত্রিশ হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু মধ্যরাতে টাকার কোন ব্যবস্থা করতে পারেননি। পরদিন রোববার সকালে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে পাঠানো টাকা তুলতে শ্রীপুর বাজারে যান। পরে বাজারে থাকাকালীন তাকে জানানো হয় তার ভাই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন। অভিযুক্ত মোজাম্মেল হক জানান, তারা ঘটনা মীমাংসা বা কোনো টাকা দাবী করেননি।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হাসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি বিভিন্ন ভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, এঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
বহুমাত্রিক.কম