উষ্ণায়নের জন্য অত্যন্ত দ্রুত হারে গলে যাচ্ছে আর্কটিক সাগরের বিশাল বিশাল পুরু বরফের চ্যাঁই। এই মাসের প্রথমার্ধ পর্যন্ত যতটা বরফ গলেছে সুমেরু সাগরে তা গত ৫০ বছরে দ্বিতীয় সর্বাধিক। এর চেয়ে বেশি বরফ আট বছর আগে ২০১২ সালে একবারই গলেছিল সুমেরু সাগরে।
উপগ্রহের পাঠানো তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে এ কথা জানিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ও আমেরিকার ন্যাশনাল স্নো অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টার (এনএসআইডিসি)।নাসা এবং এনএসআইডিসি জানাচ্ছে, এ বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সুমেরু সাগরের ৯ লক্ষ ৫৮ হাজার বর্গ মাইল (বা, ২৪ কোটি ৮০ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার) এলাকার বরফ গলেছে।
শীতে প্রায় গোটা সুমেরু সাগরই ঢেকে যায় পুরু বরফের চাদরে। বরফে ঢেকে যায় লাগোয়া এলাকাগুলিও। ফিবছরই শেষ বসন্ত আর গ্রীষ্মে সেই বরফের চাদর আর চাঙড়গুলি গলে পাতলা হয়ে যায়। আবার শীত আর শরতে তা পুরু হয়ে ছড়িয়ে পড়ে গোটা সুমেরু সাগরে।
নাসা জানাচ্ছে, এ বছর যে হারে বরফ গলতে শুরু করেছে সুমেরু সাগরে তার যথেষ্টই প্রভাব পড়তে পারে স্থানীয় বাস্তুতন্ত্র এবং আঞ্চলিক ও বিশ্বের আবহাওয়ার উপরে। এর ফলে, আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরে পানির স্রোতের ধরনও বদলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।
নাসার বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, সাইবেরিয়ার তাপপ্রবাহের জন্যই এ বছর সুমেরু সাগরে বরফ গলার সময় অনেকটা এগিয়ে এসেছে। এই তাপপ্রবাহের জন্যই গড় তাপমাত্রার চেয়ে এ বছর সুমেরুর তাপমাত্রা বেড়ে গেছে ১৪ থেকে ১৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট (বা, ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।
সুমেরু সাগরের বরফ এ বছর আরও বেশি পরিমাণে গলে যাওয়ার আরও একটি কারণ খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা দেখেছেন, আটলান্টিক মহাসাগরের উষ্ণ পানিপ্রবাহও নীচ থেকে তাতিয়ে দিচ্ছে সুমেরু সাগরকে। তার ফলে আরও দ্রুত হারে অনেক বেশি এলাকা জুড়ে এ বছর গলে গিয়েছে সুমেরু সাগরের বরফের চাদর ও পুরু চাঙড়গুলি। এর ফলে আবার যখন বরফের চাদর আর চাঙরগুলি জমে যাবে তখন আর আগের মতো অতটা পুরু হবে না সেগুলি।