Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১২ ১৪৩১, শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪

গলতে শুরু করেছে আর্কটিক সাগরের শেষ বরফের অঞ্চলটিও

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:০৬, ৪ জুলাই ২০২১

প্রিন্ট:

গলতে শুরু করেছে আর্কটিক সাগরের শেষ বরফের অঞ্চলটিও

পৃথিবীর উত্তরের মেরু অঞ্চল আর্কটিক। এ অঞ্চলের পুরোটাই বরফে আচ্ছাদিত। আর্কটিক অঞ্চলের আর্কটিক সমুদ্রের বরফ বছরের সেপ্টেম্বর মাসে গলতে শুরু করে। আর্কটিকের দুর্গম অঞ্চলে বাস করে পোলার বিয়ার বা শ্বেত ভাল্লুক আর সিল।

সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, পোলার বিয়ারের টিকে থাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। গ্রিনল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে ওয়ান্ডেল সামুদ্রিক এলাকাকে শেষ বরফ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর্কটিকের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে এই অঞ্চলটি শেষ বরফ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেখানে বরফ দীর্ঘস্থায়ী হবে।

সাধারণত অন্যান্য এলাকার চেয়ে এই অঞ্চলের বরফ পুরু থাকে সারা বছর। কিন্তু গেল গ্রীষ্ম মৌসুমে আর্কটিক সমুদ্রে রেকর্ড পরিমাণ বরফ গলেছে। গ্রিনল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে ওয়ান্ডেল সামুদ্রিক এলাকাকে শেষ বরফ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এর আগে, গ্রীষ্ম মৌসুমেও আর্কটিক সাগরের এই বরফ-সাম্রাজ্যের কিছুই হত না। বরফ এতটাই জমাট বাঁধা ছিল যে, একটুও গলতো না। তাই গ্রীষ্মে আর্কটিক সাগরে শ্বেত ভাল্লুকদের শেষ ঠিকানা ছিল এই বরফ-সাম্রাজ্যই।

সাগরের অন্য জায়গার বরফ গ্রীষ্মে গলে যেতে শুরু করলে শাবকদের বাঁচাতে এই বরফ-সাম্রাজ্যে চলে আসত সামুদ্রিক সিল। সেটাই ছিল তাদের কাছে শেষ আশ্রয়। বরফের মধ্যে বানানো গর্তে তারা রেখে দিত তাদের শাবক। আর সেটা শ্বেত ভাল্লুকদের প্রিয় খাবার হওয়ায় গ্রীষ্মে আর্কটিক সাগরের এই শেষ বরফ-সাম্রাজ্যই হয়ে উঠত তাদের প্রিয় জায়গা, থাকার জন্য, খেয়ে বাঁচার জন্য।

গত বছরের আগস্টে বিভিন্ন স্যাটেলাইটের পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানান, সারা বছর যেখানে পুরু বরফ জমে থাকে, আর্কটিক সাগরের সেই একাংশ ওয়ান্ডেল সাগরের বরফের স্তরে গত বছরের আগস্টে ভয়াবহ চিড় ধরে। আর্কটিক সাগরে বিশাল বিশাল বরফের পুরু স্তরগুলো ভেসে ভেসে থমকে যায় গ্রিনল্যান্ড আর কানাডার উত্তর উপকূলে।

স্যাটেলাইটে ধরা পড়ে, সেখানে সমুদ্রের বরফের ঘনত্ব ৫০ শতাংশ কমে যায়। এটি গ্রীষ্ম মৌসুমে আর্কটিক সাগরে বরফের স্তর কমে যাওয়ার রেকর্ড।

বিজ্ঞানীরা জানান, আর্কটিক সাগরের এই শেষ বরফ-সাম্রাজ্যে এত বড় চিড় ধরার কারণ দুটি। উষ্ণায়নের কারণে এ অঞ্চল সংলগ্ন এলাকায় বাতাসের গতির তীব্রতা কয়েকগুণ বেড়েছে গত এক দশকে। এজন্য সাম্রাজ্যের অন্তত ৮০ শতাংশ বরফে বড়সড় ফাটল ধরেছে। বাকি ২০ শতাংশ বরফ গলার জন্য সরাসরি দায়ী উষ্ণায়ন। যার একমাত্র কারণই মানুষ।

এ অঞ্চলের সমুদ্রের উপরিভাগের বরফও আর আগের মতো পুরু হচ্ছে না। বরফের স্তর পাতলা হতে শুরু করায় এ অঞ্চলের প্রাণীদের জীবনযাপন হুমকির মুখে পড়েছে। এ অঞ্চলের শিকারি প্রাণী পোলার বিয়ার বা শ্বেত ভাল্লুক। বরফের স্তর পাতলা হওয়ায় এ প্রাণীগুলোর ওজন নিতে পারছে না।

এ প্রাণীগুলোর খাবারের জন্য আর্কটিকের আরেক প্রাণী সীলের ওপর নির্ভরশীল। সামুদ্রিক সিল শিকার করে পোলার বিয়ার। খাবারের সংকটে অনেক সময় লোকালয়ে আসছে পোলার বিয়ার।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer