
মৌলভীবাজার: শনিবার রাতে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের প্রবেশ পথ এলাকা থেকে বিশালাকৃতির একটি সেগুন গাছ কেটে নিয়েছে সংঘবদ্ধ কাঠচোর চক্র। মূল্যবান ওই সেগুন গাছটির মূল্য হবে প্রায় কয়েক লাখ টাকা।
মাত্র মাসখানেক পূর্বে চিহ্নিত কাঠচোরদের প্রহরী হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় গুঞ্জন উঠেছে, নতুন ‘প্রহরীদের’ সহায়তাতেই কী এসব বৃক্ষ সাবাড় হচ্ছে? কেউ কেউ গ্রামের প্রচলিত প্রবাদ ‘শিয়ালের কাছে মুরগি পাহারা’ দেওয়ার কথাও বলছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান প্রবেশ পথের প্রায় ৩শ’ গজ অদুর থেকে বিশাল আকৃতির একটি সেগুন গাছ কেটে নিয়েছে কাঠচোর চক্র। কেটে নেওয়া গাছের পাশে পড়ে রয়েছে গাছের খন্ড অংশ। স্বল সংখ্যক লোকবল দিয়ে রক্ষিত উদ্যানে প্রবেশের মূল পথের পাশ থেকে সেগুন গাছটি কেটে নেওয়ায় বনকর্মী ও টহল দলের দায়িত্ব পালন নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
গাছ গাছালিসহ বনজ সম্পদ রক্ষার জন্য এক মাস আগে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে চিহ্নিত গাছ চোরদের পাহারাদার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এদের সবার বিরুদ্ধে একাধিক বন মামলাও রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের মতে এই গাছ চুরির সাথেও ওদের কারো সম্পৃক্ততার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে। লাউয়াছড়া উদ্যান থেকে সেগুন গাছ কেটে নেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে লাউয়াছড়া বনবিট কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে বন আইনে মামলা করা হয়েছে। চুরি হওয়া গাছ উদ্ধারে চেষ্টা চলছে।
বিভাগীয় বনকর্মকর্তা(বন্যপ্রাণী) মাহবুবুর রহমান বলেন, কেটে নেওয়া সেগুন গাছ উদ্ধারসহ খোঁজ নিয়ে গাছ চোরদের বিরুদ্ধে মামলা দিতে বনরেঞ্জ কর্মকর্তা ও বনবিট কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চিহ্নিত গাছ চোরদের পাহারাদার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া সম্পর্কে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়টি লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির দায়িত্ব। তিনি এ বিষয়ে জাতীয় উদ্যান সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিসহ অন্যান্যদের সাথে কথা বলবেন বলেও জানান।
বন্য প্রাণির অভয়ারন্য হিসাবে পরিচিত লাউয়াছড়া উদ্যান। বন্য প্রাণির খাবার ও আশ্রয় স্থলকৃত উদ্যানটিতে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন প্রজাতির মূল্যবান গাছ গাছালি সাবাড় হচ্ছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে জাতীয় উদ্যানের জীববৈচিত্র্য। এভাবে গাছ চুরি হওয়ায় বন্যপ্রাণি খাবার সন্ধানে বেরিয়ে আসছে লোকালয়ে।
বহুমাত্রিক.কম