অধ্যাপক আ ন ম আমিনুর রহমানের হাতে অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন জাবির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক নূরুল আলম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত ‘পাখি মেলা ২০২৩’-এ পাখির আবাস্থল রক্ষায় বিশেষ অবদান রাখার জন্য প্রিন্ট মিডিয়া ক্যাটাগরিতে ‘কনজারভেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্বদ্যিালয়ের গাইনিকোলজি, অবস্টেট্রিক্স অ্যান্ড রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ বিভাগের অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রিয় গ্রন্থাগারের গ্রন্থাগার প্রধান দেশের স্বনামধন্য পাখি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আ ন ম আমিনুর রহমান।
শুক্রবার (৩.৩.২০২৩) সকালে জাবির জহির রায়হান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত পাখিমেলা-২০২৩-এ এই অ্যাওয়ার্ড অধ্যাপক রহমানের হাতে তুলে দেন জাবির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক নূরুল আলম। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বনবিভাগ, আইইউসিএনসহ দেশের প্রকৃতি, পাখি ও বন্যপ্রাণীর সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত কুরমা চা বাগানের ভিতর অবস্থিত ১০ একরের একটি ক্ষুদ্র প্রাকৃতিক পক্ষী নিবাস ধ্বংসের প্রতিবাদস্বরূপ প্রথম আলোর শেষের পাতায় লিখিত ‘একটি পক্ষী নিবাসের মৃত্যু’ শীর্ষক ফিচারের জন্য প্রিন্ট ক্যাটাগরিতে তিনি ’কনজারভেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন। আনন্দের বিষয় হলো এই ফিচার প্রকাশের পর চা বাগান কর্তৃপক্ষ বনবিভাগের সহযোগিতায় উক্ত জায়গাটিকে ‘কুরমা পাখি অভয়াশ্রম’ ঘোষনা করেছেন এবং সম্পর্কে সচেতনামূলক সাইবোর্ড লাগিয়েছেন।
অধ্যাপক আ ন ম আমিনুর রহমান দৈনিক প্রথম অলোসহ বিভিন্ন দৈনিক ও অন্যান্য পত্রিকায় নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের পাখি ও বন্যপ্রাণীর পরিচিত ও সংরক্ষণমূলক ফিচার লিখে যাচ্ছেন। পাখি দেখা, পাখির ছবি তোলা এবং পাখি ও তাদের খাদ্য এবং আবাস্থল সংরক্ষণ বিষয়ে আপামোর জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করতে গত ৩২ বছর যাবৎ তিনি লেখালেখির কাজ করছেন। এছাড়াও পাখি চেনা ও পাখি সংরক্ষণ বিষয়ে আগ্রহীদের হাতে কলমে শিক্ষা দেয়ার জন্য তিনি গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন সংগঠন। এসব সংগঠনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিডি বার্ডার্স, বিডি ওয়াইল্ডলাইফারস এবং বিডি ওয়াইল্ডলাইফ ভেট্স অ্যান্ড রেসকিউয়ারস। এসব সংগঠন পাখি ও বন্যপ্রাণীর ব্যাপারে জনগনকে সচেতন করা ছাড়াও পাখি ও বন্যপ্রাণী উদ্ধার, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে কাজ করে থাকে।
এছাড়াও অধ্যাপক রহমান পাখি ও বন্যপ্রাণী বিষয়ে গবেষণার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ বিভাগে গড়ে তুলেছেন ‘বন্যপ্রাণী প্রজনন ও সংরক্ষণ’ গবেষণাগার। এই গবেষণাগার দেশের জন্য বন্যপ্রাণী চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ তৈরিতে বিশেষ অবদান রাখছে। বর্তমানে এই গবেষণাগারে এদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া অনিন্দ সুন্দর ময়ূরের বিভিন্ন দিক নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে। এই গবেষণা ভবিষ্যতে ময়ূরকে এদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে অবদান রাখবে বলে আশা করা যায়। তাছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার হওয়া আহত পাখি-প্রাণীদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনেও বিশেষ অবদান রাখছে। পত্রপত্রিকায় লেখালেখির পাশাপাশি অধ্যাপক আমিনুর রহমান এ পর্যন্ত পাখি ও বন্যপ্রাণীবিষয়ক পাঁচটি বই লিখেছেন।