
ছবি- সংগৃহীত
চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর ওপর ট্রেনের ধাক্কায় সংঘটিত দুর্ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে চার রেল কর্মীকে।শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
বরখাস্তকৃতরা হলেন পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের দায়িত্ব পালনকারী গার্ড সোহেল রানা (হেড কোয়ার্টার, চট্টগ্রাম), লোকো মাস্টার গোলাম রসুল (টি নং-৫৩০), সহকারী লোকো মাস্টার আমিন উল্লাহ (টি নং-৭২৩) এবং অস্থায়ী গেট কিপার (টিএলআর) মাহবুব।
দুর্ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা চট্টগ্রাম এর নেতৃত্বে গঠিত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, ডিএমই ( লোকো), চট্টগ্রাম, ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার -১ এবং বিভাগীয় চিকিৎসক, পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি গত ৫ জুন রাত দশটায় চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু পার হওয়ার সময় সিগন্যাল না মেনে কিছু যানবাহন ব্রিজে উঠে গেলে দুর্ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়। আহতদের চট্টগ্রাম রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি চট্টগ্রাম শহরের দিকে যাচ্ছিল। তবে দুর্ঘটনাস্থলে কোনো গেটম্যান ছিল না। গেটম্যান না থাকায় গাড়িগুলো পারাপার হচ্ছিল। প্রথমে একটি সিএনজি নিরাপদেই পার হতে পেরেছে। তবে বাকি গাড়িগুলোর সঙ্গে ট্রেনের সংঘর্ষ হয়।
দ্রুতগামীর ট্রেন হওয়ায় ক্ষতি বেশি হয়েছে জানিয়ে তারা আরও বলেন, দুর্ঘটনার পর আশপাশের সবাই মিলে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িগুলো সরানোর চেষ্টা করেছেন। একটি সিএনজি সরিয়ে পাশে রাখা হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবী রেসকিউ টিমের সদস্যরা জানান, দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করা হয়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আনুমানিক ৫-৬টি গাড়ি চাপা পড়েছে।
দুর্ঘটনার বিষয়ে গুমদণ্ডী রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশনমাস্টার আজম উদ্দিন বলেন, সেতুর ওপর একটি গাড়ি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এ কারণে সব গাড়ি সেতু থেকে নামতে পারেনি। নিয়ম হলো ট্রেন পূর্ব প্রান্তে এসে দাঁড়াবে। এরপর লাইনম্যানের সংকেত নিয়ে সেতুতে উঠবে। কিন্তু ট্রেনচালক এ নিয়ম না মেনে দ্রুতগতিতে সেতুতে উঠে যান। আবার উল্টো দিক থেকে গাড়ি আসছিল। এ কারণে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন।
কালুরঘাট ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘রাত পৌনে ১১টার দিকে আমরা খবর পাই। আমাদের দুটি ইউনিট অ্যাম্বুলেন্সসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। হতাহতদের উদ্ধারে কাজ চলছে।’
চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশ সুপার শাকিলা সোলতানা বলেন, ‘ট্রেনের সঙ্গে অটোরিকশা, টমটম ও পিকআপের সংঘর্ষ হয়েছে। এক শিশুসহ ৩ জন নিহত হয়েছেন এবং কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন।’