Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

আষাঢ় ২৮ ১৪৩২, রোববার ১৩ জুলাই ২০২৫

প্রো-ভিসি নিয়োগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত যবিপ্রবি ক্যাম্পাস

কাজী রকিবুল ইসলাম, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:২৬, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রিন্ট:

প্রো-ভিসি নিয়োগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত যবিপ্রবি ক্যাম্পাস

ফাইল ছবি

প্রো-ভিসি নিয়োগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর হিসেবে পরিচিত সদ্য চাকুরীচ্যুত সাবেক সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুমের স্বামী সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর এফ এম সাইফুল ইসলামকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রো-ভিসি বানানোর চেষ্টা চলছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্রে জানা গেছে।তিনি সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন “ গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের” নেতা এবং ক্রপ বোটানি এন্ড টি প্রোডাকশন টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক। 

জানা যায়, ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে রাতের ভোটের মূল কারিগর ছিলেন। যার পুরস্কার স্বরূপ পরবর্তীতে তাকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। চাকুরী শেষে আবারো পুরুস্কার হিসেবে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা তাকে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সদস্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। জুলাই বিপ্লবে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেই গত বছরের ৮ অক্টোবর ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসেবে খ্যাত ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুমকে পিএসসির সদস্য থেকে বরখাস্ত করে। 

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী শাসন আমলে ২০১২ সালে স্ত্রী ড. নাজমানারা খানুমের লবিংয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন ড. সাইফুল ইসলাম। তিনি সিকৃবিতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন গনতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের নেতা ছিলেন। আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের প্যানেল থেকে দুই দুইবার সিকৃবির সিন্ডিকেট সদস্য (২০১৪-১৬ ও ২০২২-২৪ সাল) নির্বাচিত হন তিনি। এছাড়াও ২০১৫-২০১৭ সালে কৃষি অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করেন ড. সাইফুল। 

তার আপন ভায়রা ভাই ডক্টর  কে এম দেলোয়ার হোসেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায়। ডঃ সাইফুল ইসলাম জুলাই ২৪ বিপ্লবে আন্দোলন চলাকালে বিভিন্ন কটুক্তিসহ তার বিরুদ্ধে  ফ্যাসিষ্টের সহযোগী  হিসেবে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তিনি এখনো  সামাজিক মাধ্যমে বলে বেড়াচ্ছেন আপা (শেখ হাসিনা)  দ্রুতই দেশে ফিরবেন এবং জুলাই বিপ্লবের সমন্বয়কারীসহ আন্দোলনের সমর্থকদের শায়েস্তা করবেন। 

এদিকে উপ-উপাচার্য  হিসেবে ডক্টর সাইফুলের নাম  শিক্ষা মন্ত্রনালয় হয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির দপ্তরে প্রস্তাব যাওয়ার খবরে  উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যবিপ্রবি ক্যাম্পাস। বুধবার দিনভর ক্যাম্পাসে মানববন্ধনসহ মিছিলে মিছিলে উত্তপ্ত হয়ে গোটা গোটা ক্যাম্পাস। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা নতুন করে কোন পতিত স্বৈরাচারের ফ্যাসিষ্টকে প্রবেশ করতে না দেওয়ার ঘোষনা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয় রাশেদ খান বলেণ, শত সহ¯্র শহীদের রক্তের বিনিময়ে সদ্য বিতাড়িত স্বৈরাচারের কোন দোসরকে নতুন ভাবে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূর্ণবাসন করা যাবে না। প্রয়োজনে ছাত্র-জনতাকে সাথে নিয়ে ক্যাম্পাস অচল করে দেওয়া হবে। আমাদের গায়ে একবিন্দু রক্ত থাকতে ড: সাইফুল কে যবিপ্রবি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। একই সাথে পতিত স্বৈরাচারের ফ্যাসিষ্ট ও চিহ্নিত এই দোসরকে যবিপ্রবি ক্যাম্পাসের প্রো-ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়ার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান ছাত্রনেতৃবৃন্দ।