ছবি: বহুমাত্রিক.কম
গ্রামীণ উন্নয়ন ও প্রান্তিক মানুষের উন্নতি নিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাবনাকে সরল ভাষ্যে তুলে এনেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক, বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। ড. রহমানের সাম্প্রতিকতম গ্রন্থ ‘রবীন্দ্র চিন্তায় দারিদ্র্য ও প্রগতি’ পাঠকদের কাছে নতুন এক রবীন্দ্রনাথকে হাজির করেছে, যেখানে জমিদার রবীন্দ্রনাথ প্রজাকুলের কাছে তাদের মুক্তির দিশারী হিসেবে পূজিত হয়েছেন।
রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণ বার্ষিকীর প্রাক্কালে শনিবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর বাংলামোটরে উন্নয়ন সমন্বয়ের কার্যালয়ে ড. আতিউর রহমান রচিত ‘রবীন্দ্র চিন্তায় দারিদ্র্য ও প্রগতি’ শীর্ষক গ্রন্থের পাঠ উন্মোচন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিশিষ্টজনরা গ্রন্থটিকে রবীন্দ্রনাথের জীবন ও চিন্তার এক নতুন অধ্যায়কে সহজভাবে পাঠকদের কাছে তুলে ধরার প্রচেষ্টা হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
পাঠ উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার নিউমারারি অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম এবং প্রধান আলোচক ছিলেন শিক্ষাবিদ ও নাট্যকার অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকী।
অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম বলেন, ‘রবীন্দ্র চিন্তায় দারিদ্র্য ও প্রগতি’ শীর্ষক গ্রন্থের প্রতিটি লেখা খুবই প্রাসঙ্গিক। যারা উন্নয়ন-অগ্রগতি বিষয়ে গবেষণা করছেন তাদের এই বইটি নিবিড়ভাবে পড়তে হবে। কেননা বইটি পড়লে রবীন্দ্রনাথের উন্নয়ন ভাবনা সম্পর্কে গভীরভাবে জানা যাবে।
অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকী বলেন, ইতিহাসে অনেক সত্য লুকিয়ে আছে। সেই সত্য উন্মোচনে আরও কাজ করতে হবে। ‘রবীন্দ্র চিন্তায় দারিদ্র্য ও প্রগতি’ গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথের উন্নয়ন চিন্তার নিপাট সত্য উঠে এসেছে। এটি সকলের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে লেখকের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরতে গিয়ে অধ্যাপক আতিউর রহমান বলেন, ‘‘জীবন সায়াহ্নে শেষবারের মতো যখন রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহে এসেছিলেন, প্রজাসাধারণ-কৃষককুল আকুতি জানিয়ছিল এই বলে, পরজন্মেও আপনি আমাদের জমিদার হয়েই ফির আসবেন’-এই কথার মধ্য দিয়েই আমরা অনুধাবন করতে পারি, কবি রবীন্দ্রনাথ সাধারণের কত কাছের ছিলেন।’’
‘প্রান্তজনের প্রতি একটি দায় ছিল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। তিনি ছিলেন প্রান্তজনের সখা, মানবিক এবং উচ্চ মূল্যবোধসম্পন্ন একজন মানুষ। পূর্ববাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে বিশ্বকে আপন চোখে দেখেছেন তিনি। এ কারণেই সমকালীন উন্নয়ন ভাবনায় আজকের দিনেও রবীন্দ্রনাথ ভীষণ প্রাসঙ্গিক’-যোগ করেন এই রবীন্দ্র গবেষক।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরজু আফরিন ক্যাথি, সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর মালেকা আক্তার চৌধুরী, বিআইজিডির ভিজিটিং ফেলো গবেষক খন্দকার সাখাওয়াত আলী, সাংবাদিক ও গবেষক জাহিদ রহমান প্রমুখ।