Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

মাঘ ৫ ১৪৩১, রোববার ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ২৯ বস্তা টাকা : চলছে গণনা

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:১৮, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

প্রিন্ট:

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ২৯ বস্তা টাকা : চলছে গণনা

ফাইল ছবি

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ১১টি দান সিন্দুকে এবার পাওয়া গেছে ২৯ বস্তা টাকা। চলছে টাকা গণনার কাজ।

৩ মাস ১৪ দিন পর শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল ৭টায় কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানম ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর নেতৃত্বে মসজিদের দানসিন্দুকগুলো একে একে খোলা হয়। এরপর প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে মসজিদের দ্বিতীয় তলায় নেয়া হয়। এর পর শুরু হয় গণনার কাজ।

দান সিন্দুক থেকে নগদ টাকা ছাড়াও পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার।

গণনায় পাগলা মসজিদ মাদ্রাসা ও আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার মোট ২৫০ জন ছাত্র এবং রূপালী ব্যাংকের ৭০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে মোট ৩২০ জন অংশ নেন। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা ছাড়াও মসজিদ-মাদ্রাসার ৩০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশ নিয়েছে।

এবার তিন মাস ২৬ দিন পর মসজিদের দান সিন্দুক খোলা হয়। এর আগে গত ১৭ আগস্ট মসজিদের দান সিন্দুক থেকে পাওয়া গিয়েছিল ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা।

এরও আগে গত ২০ এপ্রিল এ মসজিদের দানসিন্দুকগুলো খোলা হয়েছিল। পাওয়া গিয়েছিল এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা।

জানা গেছে, প্রতি তিন থেকে চার মাস পর পর এই সিন্দুক খোলা হয়। এবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সিন্দুকগুলো খোলার কাজ শুরু হয়। প্রথমে টাকাগুলো লোহার সিন্দুক থেকে বস্তায় ভরা হয়। পরে মসজিদের দোতলায় নিয়ে মেঝেতে ঢালা হয়। এরপর শুরু হয় টাকা গণনার কাজ।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানম ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর নেতৃত্বে দান সিন্দুক খোলা হয়। এ সময় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, রূপালী ব্যাংকের এজিএম রফিকুল ইসলাম, মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়াসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে এই মসজিদে দান করছেন। যারা দান করতে আসেন তারা বলে থাকেন, এখানে দান করার পরে নাকি তাদের মনের আশা পূরণ হয়। ফলে দিন দিন বাড়ছে দানের পরিমাণ। এ টাকা দিয়ে ছয় তলা বিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ আকর্ষণীয় একটি ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এতে অর্ধলাখ মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করতে পারবেন। একই সঙ্গে পাঁচ হাজার মহিলারও আলাদাভাবে নামাজের ব্যবস্থা থাকবে। সেটির পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা যাচাই-বাছাই করে ডিজাইন ও নকশা চূড়ান্ত করে দিলেই দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কাজ শুরু হবে। এতে প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। কাজ শুরু হলে টাকা বাড়তেও পারে।

জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানম জানান, পাগলা মসজিদ ও ইসলামী কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেয়ার পাশাপাশি অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্তদের সহায়তা করা হয়ে থাকে।

উল্লেখ্য, কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ ভূমির ওপর এ মসজিদটি গড়ে উঠেছিল। বর্তমানে ৩.৮৮ একর ভূমির ওপর সম্প্রসারিত পাগলা মসজিদ এলাকায় মসজিদকে কেন্দ্র করে একটি অত্যাধুনিক ধর্মীয় কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। স্বভাবতই ঐতিহাসিক এই মসজিদকে নিয়ে জেলার ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে সবাই গর্ববোধ করেন।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer