
ফাইল ছবি
চাঁদপুর: দুই মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকার পর শনিবার চাঁদপুরের মেঘনায় জেলেরা মাছ শিকার করা শুরু করেছেন।
মার্চ-এপ্রিল মাস ইলিশ অভয়াশ্রম কর্মসূচির আওতায় চাঁদপুরের মেঘনা নদীর ৬০ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকার সরকার নিষিদ্ধ করেছিল।
অভিযানকালে ৩৩৫ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া ১৬১ জেলেকে ৪ লাখ ৬১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। চাঁদপুরে মেঘনায় ৩৬ হাজার ৫৩৫ জন জেলে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। এসব জেলের মধ্যে ২৮ হাজার ৯৬৭ জেলেকে ৪ মাস ৪০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে।
হাইমচর উপজেলার জেলে আবু তাহের, সোলেমান ও হাশেম জানান, দুই মাস নিষিদ্ধ থাকায় তারা মাছ শিকার করতে পারেননি। এ সময় তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করতে হয়েছে। এখন নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় তারা মাছ ধরার জাল ও নৌকা প্রস্তুত করছেন।
চাঁদপুর সদর উপজেলার হরিনা এলাকার জেলে কাশেম ছৈয়াল, হারুন, জসিম জানান, দুই মাস মেঘনায় মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে জীবনযাপন করতে হয়। এ সময় যে পরিমাণ চাল দেয়া হয়েছে তা দিয়ে পরিবার চালানো সম্ভব ছিল না। দুই মাস পর এখন তারা মাছ ধরা শুরু করেছেন।
২০০৬ সাল থেকে মার্চ-এপ্রিল মাস চাঁদপুরের বিস্তীর্ণ নদীসীমাকে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করে জাটকা রা কর্মসূচি পালন হয়ে আসছে। জাটকা নিধন প্রতিরোধে চাঁদপুরের ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের চরআলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার নদীতে মৎস্য মন্ত্রণালয় মার্চ-এপ্রিল মাসে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এর মধ্যে চাঁদপুরের নদীসীমানা ৬০ কিলোমিটার।
মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য অফিস জানায়, ২ মাস অভিযানকালে ১৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ১১৯টি অভিযান পরিচালনা করে ৫৭.৮৯ মিটার কারেন্ট জাল ধ্বংস করা হয়েছে। এ ছাড়া ৬.৪২ মেট্রিক টন জাটকা জব্দ করে দুস্থ ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকারের অপরাধে ৮টি মামলা দায়ের ও ২৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
হাইমচর উপজেলা মৎস্য অফিস জানায়, ২ মাসে মৎস্য বিভাগ, কোস্ট গার্ড, নৌ-পুলিশ ও পুলিশ প্রশাসনের যৌথ অভিযানে ১৯১ জেলে আটক, তাদের মধ্যে ১০০ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ৯১ জেলের জরিমানা, ২ লাখ ১৭ হাজার মিটার জাল ও ৫ টন ৫৪৮ কেজি জাটকা জব্দ, ২ লাখ ৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
বহুমাত্রিক.কম