
ছবি- সংগৃহীত
রাজধানীর বেইলি রোডের ‘বেইলি হাইটস’ নামে একটি ভবনের চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে ৩টি কষ্টিপাথরের মূর্তি ও মাদকসহ চার চোরাকারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব–১০। মঙ্গলবার বিকেল তিনটার দিকে মোহাম্মদ জাকির হোসেন, আহমদ মোস্তফা, আনারুল হক ও হাবিবুর রহমান নামে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৩৪ কোটি টাকা মূল্যের কষ্টিপাথরের মূর্তি এবং ৪০ লাখ টাকা বিদেশি ব্র্যান্ডের মদ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার রাতে ঢাকার কেরানীগঞ্জে র্যাব–১০ এর সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে র্যাব–১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারি একদল চোরাকারবারী দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কস্টিপাথর ও বিদেশি মদসহ বড় একটি চালান নিয়ে তাদের সুবিধাজনক স্থানে মজুত করে রেখেছে। তথ্যের সূত্র ধরে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
র্যাবের অধিনায়ক বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধভাবে কষ্টিপাথরের মূর্তি ও বিদেশি মদসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে চোরাচালানের মাধ্যমে পাচার করার তথ্য জানায়। তারা মূলত স্বল্প সময়ে অধিক অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে এই ব্যবসার সিন্ডিকেট গড়ে তোলে বলে জানিয়েছে।
তিনি বলেন, কষ্টিপাথরের এই মূর্তিগুলো শুধু প্রাচীন শিল্পকলার নিদর্শনই নয় বরং ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সাংস্কৃতিক পরিচয়ও বহন করে। শত শত বছর আগের প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য বহনকারী এই কষ্টিপাথরের মূর্তিগুলো বাঙালির অতীত সভ্যতা, ধর্মীয় বিশ্বাস এবং শিল্পবোধের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মূর্তিগুলো সংরক্ষণ কেবল একটি প্রশাসনিক কর্তব্য নয়, এটি জাতির প্রতি একটি নৈতিক দায়বদ্ধতা। এসব ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষিত হোক, যাতে সাধারণ দর্শক, গবেষক এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। মূর্তিগুলো জাদুঘরে সংরক্ষণের ফলে মানুষের ইতিহাস ও সংস্কৃতির চেতনা জাগ্রত হবে।
অধিনায়ক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, উদ্ধার কষ্টিপাথরের মূর্তিগুলির মধ্যে একটির ওজন ৮৮.৯৫০ কেজি ও উচ্চতায় ৪২.৫ ইঞ্চি এবং অন্যটির ওজন ১৯.৬৫০ কেজি ও উচ্চতায় ২৬.৫ ইঞ্চি। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে কষ্টি পাথরের মূর্তি দুইটি বিষ্ণুদেবের বলে জানা যায়। এছাড়া আরেকটি মূর্তির ওজন ৯২.৬৯০ কেজি ও উচ্চতায় ২২.৫ ইঞ্চি। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে এটা গরুর মূর্তি। উদ্ধারের পর প্রাথমিকভাবে রাজেন্দ্রপুর বাজারের স্বর্ণকার দিয়ে পরীক্ষা করে কষ্টিপাথরের মূল্যবান মূর্তি বলে শনাক্ত করা হয়েছে।