ফাইল ছবি
চলতি মাসেই নির্ধারিত সময়ে ভারতের আদানি গ্রুপের দ্বিতীয় ইউনিটের বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, সব ঠিক থাকলে আগামী ২৫ জুন থেকে ঝাড়খণ্ডে অবস্থিত ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্রটির দুই ইউনিট থেকেই বিদ্যুৎ মিলবে। ফলে চলমান সংকটে স্বস্তি দিতে সরবরাহ বাড়বে আরও ৭৫০ থেকে ৮০০ মেগাওয়াট।
ভারতের ঝাড়খণ্ডে আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আমদানি নিয়ে শুরু থেকেই নানা আলোচনা চলছে। তবে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ আর লোডশেডিংময় বর্তমান সংকটে নির্ভরতার অন্যতম কেন্দ্রে আদানির বিদ্যুৎ।
গত মার্চ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে আর এপ্রিলে বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশে আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট থেকে বর্তমানে ৭৫০ থেকে ৮০০ মেগাওয়াট হারে বিদ্যুৎ মিলছে। কথা ছিল, অপর ইউনিটের বিদ্যুৎ সরবরাহ জুন থেকে শুরু হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আদানির দ্বিতীয় ইউনিটের বিদ্যুৎ পেতে সঞ্চালন অবকাঠামোসহ যাবতীয় কারিগরি প্রস্তুতি সম্পন্ন হচ্ছে। সব ঠিক থাকলে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহেই জাতীয় গ্রিডে আদানির উভয় ইউনিটের বিদ্যুৎ যুক্ত হবে।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা প্রস্তুত রয়েছে। সঞ্চালন ব্যবস্থার জন্য বাকি যে ইউনিটের বিদ্যুৎ নিতে পারছে না সেটিও প্রস্তুত হয়ে যাবে। ফলে আগামী ২৫ জুন থেকে বা তারও আগে থেকে আমরা আদানি থেকে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট পুরোটাই পাব। এতে লোডশেডিং অনেকটা অর্ধেকে নেমে আসবে।’
যদিও আদানির বিদ্যুতের দাম নিয়ে শুরু থেকেই নানা প্রশ্ন রয়েছে। তবে বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি, পায়রা-রামপালের দামেই মিলছে আদানির বিদ্যুৎ। পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক বলেন, এটি কয়লার দামের ওপর নির্ভর করে। এখানে ১১ টাকা যোগ-বিয়োগ হচ্ছে আর কী! পায়রা-রামপাল-আদানি, সবই প্রতিযোগিতাপূর্ণ ও সমপর্যায়ের।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আদানির বাড়তি জোগান সংকটে স্বস্তির হাওয়া দেবে। তবে তারা একই সঙ্গে তুলনামূলক সাশ্রয়ী বিদ্যুতে প্রাধান্য দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম তামিম বলেন, ‘যেহেতু অন্য জায়গায় আমরা বিদ্যুৎ পাচ্ছি না, সে হিসেবে অবশ্যই যদি তারা বাড়তি সাপোর্ট দিতে পারে, তাহলে এ মুহূর্তে আমাদের যে ২ হাজার মেগাওয়াটের ঘাটতি রয়েছে, সেটি কমে আসবে। তাছাড়া আমরা যদি সব কেন্দ্র চালাই তাহলে আমাদের সবচেয়ে ব্যয়বহুল যে বিদ্যুৎকেন্দ্র সেটি বন্ধ রাখতে হবে।’
আদানির উভয় ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হলে দেশের বিদ্যুৎ সক্ষমতার সাড়ে ৬ শতাংশই হবে আদানিনির্ভর।